আরে বন্ধুরা, JLPT পরীক্ষার দিনটা যতই কাছে আসছে, বুকের ভেতর কেমন যেন একটা দুগ্দুগি লাগছে, তাই না? এই সময়টায় পরীক্ষা কেন্দ্র আর দরকারি জিনিসপত্রগুলো নিয়ে একটা স্পষ্ট ধারণা থাকা কতটা জরুরি, সেটা আমি হাড়ে হাড়ে বুঝি। আমার নিজের প্রথম JLPT N3 পরীক্ষার কথা মনে আছে, শেষ মুহূর্তে কোথায় কী রেখেছি, কী নিয়ে যাব, এই চিন্তায় নাওয়া-খাওয়া ভুলে গিয়েছিলাম। অথচ সঠিক পরিকল্পনা থাকলে এই টেনশনটা একদমই হতো না!

আসলে, শুধু পড়াশোনা করলেই হয় না, পরীক্ষার দিনের খুঁটিনাটি বিষয়গুলোও আগে থেকে জেনে রাখা দরকার। এতে পরীক্ষার হলে গিয়ে কোনো অপ্রীতিকর পরিস্থিতিতে পড়তে হয় না, আর মনোযোগটাও থাকে শুধু পরীক্ষায়।এখনকার দিনে JLPT পরীক্ষা শুধু জাপানিজ ভাষার দক্ষতা যাচাই করার একটা মাধ্যম নয়, বরং জাপানে উচ্চশিক্ষা বা চাকরির বাজারে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করার একটা দারুণ সুযোগ। তাই এই গুরুত্বপূর্ণ পরীক্ষাটা যেন কোনো ছোটখাটো ভুলের কারণে হাতছাড়া না হয়, সেদিকে খেয়াল রাখা উচিত। আমি জানি, অনেকের মনেই প্রশ্ন জাগে, “পরীক্ষার দিন ঠিক কোন জিনিসগুলো সঙ্গে নিতে হবে?”, “পরীক্ষা কেন্দ্র কেমন হবে?”, “সময়মতো পৌঁছানোর জন্য কী কী প্রস্তুতি নেব?” – এসব নিয়ে। তাই আজ আমি আমার অভিজ্ঞতা আর সাম্প্রতিক ট্রেন্ডের ওপর ভিত্তি করে আপনাদের জন্য কিছু দারুণ টিপস নিয়ে এসেছি, যা আপনার JLPT পরীক্ষার দিনটাকে আরও সহজ করে তুলবে।চলুন তাহলে, আর দেরি না করে নিচে আমরা JLPT পরীক্ষার ভেন্যু এবং প্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের একটি বিস্তারিত চেকলিস্ট সম্পর্কে জেনে নিই, যা আপনার প্রস্তুতিকে আরও মজবুত করবে।
পরীক্ষার আগের রাত: কী কী গুছিয়ে রাখবেন?
পরীক্ষার আগের রাতটা শুধু বই নিয়ে বসার সময় নয়, বরং মানসিক প্রস্তুতি আর সব জিনিসপত্র গুছিয়ে রাখার জন্য সবচেয়ে জরুরি সময়। আমার মনে আছে, প্রথম JLPT পরীক্ষার আগে আমি এতটাই নার্ভাস ছিলাম যে সবকিছু ঠিকঠাক আছে কিনা, বারবার চেক করছিলাম। এই সময়টায় ছোটখাটো একটা ভুলও পরের দিন বড় সমস্যা তৈরি করতে পারে। তাই, পরীক্ষার আগের দিন সন্ধ্যায় ঠান্ডা মাথায় বসে সবকিছু একবার দেখে নেওয়া উচিত। admit card, আইডি কার্ড, পেনসিল, রাবার – সব যেন হাতের কাছে থাকে, তা নিশ্চিত করতে হবে। তাড়াহুড়ো করে কোনো কিছু ফেলে গেলে পরীক্ষার হলে গিয়ে মেজাজটাই বিগড়ে যেতে পারে, যা সরাসরি আপনার পারফরম্যান্সে প্রভাব ফেলবে। অনেকেই ভাবেন, শেষ মুহূর্তেও পড়াশোনা চালিয়ে যাব, কিন্তু বিশ্বাস করুন, আগের রাতে ভালো ঘুম না হলে পরের দিন মগজ ঠিকমতো কাজ করে না। বরং যা শিখেছেন, সেগুলোই একবার ঝালিয়ে নিয়ে তাড়াতাড়ি ঘুমাতে যাওয়া ভালো। নিজের অভিজ্ঞতায় দেখেছি, পর্যাপ্ত ঘুম পরীক্ষার দিনে ফোকাস বাড়াতে দারুণ সাহায্য করে। তাই, রাতে হালকা খাবার খেয়ে তাড়াতাড়ি বিছানায় যান এবং দুশ্চিন্তা না করে মনকে শান্ত রাখুন। দেখবেন, পরের দিন সকালে আপনি একদম তরতাজা অনুভব করছেন।
অ্যাডমিট কার্ড ও পরিচয়ের প্রমাণপত্র
আপনার অ্যাডমিট কার্ডটা হলো পরীক্ষা হলে ঢোকার মূল চাবিকাঠি। এটা ছাড়া কিন্তু প্রবেশ করা যাবে না! আমার এক বন্ধু একবার অ্যাডমিট কার্ড আনতে ভুলে গিয়েছিল, পরে আধ ঘণ্টা ছোটাছুটি করে ফটোকপি জোগাড় করতে হয়েছিল, সে এক মারাত্মক অভিজ্ঞতা!
তাই, পরীক্ষার আগের দিনই প্রিন্ট করা অ্যাডমিট কার্ড এবং আপনার পরিচয়ের প্রমাণপত্র (যেমন পাসপোর্ট, জাতীয় পরিচয়পত্র, বা ড্রাইভিং লাইসেন্স) এক ফাইলে গুছিয়ে রাখুন। নিশ্চিত করুন যে এতে আপনার ছবি পরিষ্কার দেখা যাচ্ছে এবং তারিখ ও পরীক্ষার কেন্দ্র ঠিকঠাক উল্লেখ করা আছে। কোনো রকম কাটাকুটি বা অস্পষ্টতা থাকলে সমস্যা হতে পারে। একাধিক কপি করে রাখলে আরও ভালো হয়, যদি একটা হারিয়ে যায় বা কোনো কারণে নষ্ট হয়ে যায়।
পরীক্ষার সরঞ্জাম গুছিয়ে রাখা
JLPT পরীক্ষায় বিশেষ কিছু সরঞ্জাম প্রয়োজন হয়। যেমন, দুটি HB পেন্সিল, একটি ভালো মানের রাবার এবং একটি পেনসিল শার্পনার। এইগুলো পরীক্ষার আগের দিনেই কিনে আনুন এবং ব্যবহার করে দেখুন যে সব ঠিকঠাক কাজ করছে কিনা। অনেকেই পুরোনো রাবার নিয়ে যান, যা ঠিকমতো মোছে না, ফলে উত্তরপত্রে দাগ লেগে যেতে পারে। আমার পরামর্শ হলো, নতুন পেন্সিল আর রাবার ব্যবহার করুন। ছোট একটা স্বচ্ছ পাউচে এগুলো গুছিয়ে রাখুন যাতে পরীক্ষার হলে সহজেই খুঁজে পান। এতে আপনার সময় বাঁচবে এবং অপ্রয়োজনীয় দুশ্চিন্তা কমে যাবে। মনে রাখবেন, এসব ছোট ছোট জিনিসই কিন্তু পরীক্ষার দিনে আপনার পারফরম্যান্সে বড় পার্থক্য তৈরি করে দিতে পারে।
পরীক্ষা কেন্দ্রে পৌঁছানোর প্রস্তুতি: সময়মতো যাওয়ার দারুণ কিছু টিপস!
পরীক্ষার দিন সকালে ঘুম থেকে ওঠা থেকে শুরু করে পরীক্ষা কেন্দ্রে পৌঁছানো পর্যন্ত প্রতিটি মুহূর্তই গুরুত্বপূর্ণ। আমি বহুবার দেখেছি যে, অনেকেই শেষ মুহূর্তে তাড়াহুড়ো করে পরীক্ষা কেন্দ্রে পৌঁছানোর চেষ্টা করেন, আর এতেই বিপত্তি ঘটে। ঢাকার জ্যাম বলুন বা অন্য কোনো শহরের রাস্তার সমস্যা, সবকিছুই আপনার পৌঁছানোর সময়কে প্রভাবিত করতে পারে। তাই, পরীক্ষার দিন সকালে পর্যাপ্ত সময় হাতে নিয়ে বের হওয়াটা খুবই জরুরি। গুগল ম্যাপস বা অন্য কোনো ম্যাপ অ্যাপ ব্যবহার করে পরীক্ষার কেন্দ্রের রুট এবং সম্ভাব্য সময় আগেই জেনে রাখুন। প্রয়োজনে আগের দিন একবার কেন্দ্রটা দেখে আসা ভালো। এতে কোন পথে গেলে জ্যাম কম হবে বা কত সময় লাগতে পারে, সে সম্পর্কে একটা ধারণা পাওয়া যায়। যদি গণপরিবহনে যান, তাহলে বাস বা ট্রেনের সময়সূচী জেনে রাখুন। ব্যক্তিগত গাড়িতে গেলে পার্কিংয়ের ব্যবস্থা আছে কিনা, সেটাও খোঁজ নেওয়া উচিত। আমার প্রথম পরীক্ষায় কেন্দ্রে পৌঁছাতে গিয়ে আমি প্রায় জ্যামে আটকে পড়েছিলাম, সেদিন বুঝেছিলাম যে অন্তত ২ ঘণ্টা হাতে নিয়ে বের হওয়া কতটা প্রয়োজন। আপনার মানসিক শান্তি বজায় রাখার জন্য সময়মতো পৌঁছানোটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
রুট প্ল্যানিং ও ট্রাফিক জ্যাম ব্যবস্থাপনা
পরীক্ষার কেন্দ্রে যাওয়ার জন্য আগে থেকেই একটি রুট প্ল্যান করে রাখুন। গুগল ম্যাপস ব্যবহার করে বিভিন্ন রুটের ট্রাফিক পরিস্থিতি যাচাই করুন এবং সবচেয়ে কম সময়ে পৌঁছানোর রাস্তাটি বেছে নিন। যদি সম্ভব হয়, পরীক্ষার আগের দিন একবার পরীক্ষা কেন্দ্রের আশেপাশ থেকে ঘুরে আসুন। এতে রাস্তাঘাট সম্পর্কে আপনার একটা স্পষ্ট ধারণা তৈরি হবে এবং পরীক্ষার দিনে অপ্রয়োজনীয় টেনশন কমবে। পাবলিক ট্রান্সপোর্টে গেলে এর সময়সূচি এবং কোথায় নামতে হবে, তা জেনে রাখুন। ব্যক্তিগত গাড়ি ব্যবহার করলে পার্কিংয়ের সুবিধা আছে কিনা এবং কোনো বিকল্প রাস্তা আছে কিনা, তা জেনে রাখা বুদ্ধিমানের কাজ। আমার অভিজ্ঞতা বলে, সময়ের অন্তত দেড় থেকে দুই ঘণ্টা আগে বাসা থেকে বের হওয়া উচিত, কারণ অপ্রত্যাশিত ট্রাফিক জ্যাম বা অন্য কোনো সমস্যার কারণে দেরি হতে পারে।
সকালের হালকা নাস্তা ও পর্যাপ্ত পানি
পরীক্ষার দিন সকালে হালকা এবং পুষ্টিকর নাস্তা করা উচিত। অতিরিক্ত ভারী খাবার খেলে পরীক্ষার হলে আপনার ঘুম পেতে পারে বা হজমের সমস্যা হতে পারে। আমার পরামর্শ হলো, ডিম, কলা, টোস্ট অথবা ওটস-এর মতো খাবার খান। এগুলো আপনাকে শক্তি দেবে এবং মনকে সতেজ রাখবে। এছাড়াও, পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান করুন। ডিহাইড্রেশন পরীক্ষার সময় মনোযোগ নষ্ট করতে পারে। একটি স্বচ্ছ পানির বোতল সঙ্গে রাখুন, যা আপনি পরীক্ষার হলেও নিয়ে যেতে পারবেন। তবে অবশ্যই মনে রাখবেন, অতিরিক্ত পানি পান করলে বারবার টয়লেটে যাওয়ার প্রয়োজন হতে পারে, তাই পরিমিত পরিমাণে পান করুন। শরীরকে সতেজ রাখলে মস্তিষ্কও ভালো কাজ করবে, যা আপনার পারফরম্যান্সে সরাসরি প্রভাব ফেলবে।
পরীক্ষার হলে ঢোকার আগে: শেষ মুহূর্তের সতর্কতা!
পরীক্ষা কেন্দ্রে পৌঁছেই কিন্তু সব কাজ শেষ নয়। বরং পরীক্ষার হলে ঢোকার আগে কিছু জরুরি বিষয় মাথায় রাখা উচিত, যা আপনার শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতিকে আরও শাণিত করবে। অনেক সময় দেখা যায়, কেন্দ্রের বাইরে অনেকেই শেষ মুহূর্তের পড়াশোনায় ব্যস্ত থাকেন, কিন্তু আমার ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা বলে, ওই সময়টায় নতুন কিছু শেখার চেষ্টা না করে বরং মনকে শান্ত রাখাটাই বেশি বুদ্ধিমানের কাজ। এই সময়টায় আপনার মোবাইল ফোন, স্মার্টওয়াচ বা অন্য কোনো ইলেকট্রনিক গ্যাজেট ব্যাগে ঢুকিয়ে রাখুন। JLPT পরীক্ষায় ইলেকট্রনিক ডিভাইস একেবারেই নিষিদ্ধ এবং এর জন্য আপনার পরীক্ষা বাতিলও হতে পারে। আমি দেখেছি, অনেকে ভুলে ফোন সাইলেন্ট না করে নিয়ে যান এবং এবং পরে বিপদে পড়েন। তাই সতর্ক থাকুন। টয়লেটে যাওয়ার প্রয়োজন হলে পরীক্ষার হলে ঢোকার আগেই সেরে নিন, কারণ একবার পরীক্ষা শুরু হয়ে গেলে মাঝখানে বের হওয়ার সুযোগ নাও থাকতে পারে। শেষবারের মতো আপনার অ্যাডমিট কার্ড আর আইডি কার্ড হাতে আছে কিনা, দেখে নিন। একটা গভীর শ্বাস নিন এবং নিজেকে মনে করিয়ে দিন যে আপনি প্রস্তুত।
মোবাইল ফোন ও ইলেকট্রনিক ডিভাইস ব্যবস্থাপনা
JLPT পরীক্ষায় মোবাইল ফোন, স্মার্টওয়াচ, ক্যালকুলেটর বা অন্য কোনো ইলেকট্রনিক গ্যাজেট নিয়ে প্রবেশ করা কঠোরভাবে নিষিদ্ধ। আমি এমন অনেক পরীক্ষার্থীকে দেখেছি, যারা এই নিয়ম অমান্য করার কারণে বিপদে পড়েছেন। পরীক্ষা কেন্দ্রে প্রবেশ করার আগেই আপনার মোবাইল ফোন বন্ধ করে ব্যাগের ভেতর ঢুকিয়ে রাখুন। স্মার্টওয়াচ পরে থাকলে সেটি খুলে ব্যাগে রাখুন। যদি সম্ভব হয়, বাড়িতেই এসব জিনিসপত্র রেখে যান, এতে কোনো ঝুঁকি থাকবে না। আমি সবসময় চেষ্টা করি, পরীক্ষা দিতে যাওয়ার সময় শুধু প্রয়োজনীয় জিনিসগুলোই নিতে, যাতে কোনো অপ্রীতিকর পরিস্থিতি এড়ানো যায়। মনে রাখবেন, নিয়ম ভঙ্গের কারণে আপনার পরীক্ষা বাতিল হতে পারে, যা আপনার এতদিনের কঠোর পরিশ্রমকে বৃথা করে দেবে।
শেষবারের মতো জরুরি কাজ সেরে নেওয়া
পরীক্ষার হলে ঢোকার আগে টয়লেটে যাওয়ার প্রয়োজন হলে তা সেরে নিন। একবার পরীক্ষা শুরু হয়ে গেলে মাঝপথে বের হওয়া বেশ কঠিন হতে পারে, এবং এতে আপনার মূল্যবান সময় নষ্ট হবে। এছাড়াও, হালকা কিছু খেয়ে নিতে পারেন যদি খুব বেশি ক্ষুধা পেয়ে থাকে, তবে এমন কিছু খাবেন না যা আপনার পেটে সমস্যা তৈরি করতে পারে। নিশ্চিত করুন যে আপনি শারীরিক ও মানসিকভাবে প্রস্তুত। একটি গভীর শ্বাস নিন, নিজেকে শান্ত করুন এবং আত্মবিশ্বাসী থাকুন। মনে রাখবেন, আপনার প্রস্তুতি যথেষ্ট ভালো, শুধু শান্ত থেকে নিজের সেরাটা দেওয়াটা এখন জরুরি। আমার মনে আছে, একবার আমি টয়লেটে যেতে ভুলে গিয়েছিলাম, পরে পরীক্ষার মাঝখানে অস্বস্তি লাগছিল, যা আমার মনোযোগে ব্যাঘাত ঘটিয়েছিল। তাই, এই ছোট ছোট বিষয়গুলোও গুরুত্বপূর্ণ।
পরীক্ষার হলে আপনার ‘অস্ত্রশস্ত্র’: যা সঙ্গে রাখা আবশ্যক!
JLPT পরীক্ষার দিন আপনার কিছু বিশেষ ‘অস্ত্রশস্ত্র’ সঙ্গে রাখা আবশ্যক, যা আপনাকে নির্বিঘ্নে পরীক্ষা দিতে সাহায্য করবে। এই জিনিসগুলো শুধু প্রয়োজনীয়ই নয়, বরং পরীক্ষার সময় আপনার আত্মবিশ্বাস বাড়াতেও সহায়তা করে। আমি যখন প্রথমবার পরীক্ষা দিচ্ছিলাম, তখন মনে হয়েছিল সবকিছু ঠিকঠাক নিয়েছি, কিন্তু ছোট একটি রাবার কাজ না করায় কী যে সমস্যায় পড়েছিলাম!
তাই, এসব জিনিসপত্র উচ্চমানের হওয়া খুব জরুরি। পেন্সিলগুলো যেন ভালো করে শার্প করা থাকে এবং রাবারটা যেন পরিষ্কার ও কার্যকরী হয়। স্বচ্ছ একটি পেনসিল বক্স বা পাউচ ব্যবহার করুন, যাতে পরীক্ষার হলে সহজেই আপনার প্রয়োজনীয় জিনিস খুঁজে পান। ঘড়ি হিসেবে সাধারণ অ্যানালগ ঘড়ি নিয়ে যেতে পারেন, কারণ ডিজিটাল বা স্মার্টওয়াচ অনুমোদিত নয়। অনেকেই পানির বোতল নিয়ে যেতে ভুলে যান, যা গরমে বা দীর্ঘ পরীক্ষার সময় আপনাকে ক্লান্ত করে দিতে পারে। একটি স্বচ্ছ বোতলে পানি নিয়ে যাওয়া আপনার জন্য বেশ সুবিধাজনক হবে। অতিরিক্ত কোনো কাগজ বা বই নিয়ে যাবেন না, কারণ এগুলো পরীক্ষার হলে নিষিদ্ধ।
অবশ্যই সঙ্গে রাখবেন যা
পরীক্ষার দিন কিছু জিনিসপত্র অবশ্যই সঙ্গে রাখতে হবে। এর মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো আপনার প্রবেশপত্র (admit card) এবং একটি বৈধ সচিত্র পরিচয়পত্র। এই দুটি জিনিস ছাড়া কোনো অবস্থাতেই আপনাকে পরীক্ষা কেন্দ্রে প্রবেশ করতে দেওয়া হবে না। আমার নিজের অভিজ্ঞতা থেকে বলছি, তাড়াহুড়ো করে কোনো একটি ভুলে গেলে পুরো দিনের পরিকল্পনাটাই এলোমেলো হয়ে যায়। দুটি HB পেন্সিল, একটি ভালো মানের রাবার এবং একটি পেন্সিল শার্পনার – এইগুলো পরীক্ষার জন্য অত্যন্ত জরুরি। পেন্সিলগুলো যেন ভালোভাবে শার্প করা থাকে এবং রাবারটা যেন সহজে মোছা যায়, সেদিকে খেয়াল রাখবেন। একটি সাধারণ অ্যানালগ ঘড়ি আপনার সময় ব্যবস্থাপনার জন্য অপরিহার্য, কারণ পরীক্ষার হলে সবসময় ঘড়ি নাও থাকতে পারে এবং ডিজিটাল ঘড়ি নিষিদ্ধ। এছাড়াও, একটি স্বচ্ছ পানির বোতল সঙ্গে রাখা উচিত, যাতে আপনি পরীক্ষার মাঝে তৃষ্ণা মেটাতে পারেন।
নিষিদ্ধ উপকরণ: যেগুলি ভুল করেও নেবেন না
JLPT পরীক্ষায় কিছু উপকরণ সম্পূর্ণভাবে নিষিদ্ধ এবং এগুলো সঙ্গে রাখলে আপনার পরীক্ষা বাতিল হতে পারে। এর মধ্যে প্রধান হলো মোবাইল ফোন, স্মার্টওয়াচ, ক্যালকুলেটর, ডিকশনারি, এবং অন্য কোনো ইলেকট্রনিক ডিভাইস। ভুলেও এগুলো পরীক্ষা হলে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করবেন না। এমনকি যদি আপনার কাছে এগুলো থাকেও, পরীক্ষা কেন্দ্রে ঢোকার আগেই সেগুলো ব্যাগে ঢুকিয়ে দিন বা বাড়িতে রেখে আসুন। কোনো রকম বই, খাতা, নোটস, বা অতিরিক্ত কাগজও পরীক্ষার হলে অনুমোদিত নয়। পরীক্ষার হলে কোনো ধরনের কানেক্টিভিটি ডিভাইস, যেমন ব্লুটুথ হেডফোন বা ইয়ারফোন নিয়ে যাওয়াও নিষেধ। আমি দেখেছি, অনেকে অসাবধানতাবশত এসব জিনিস নিয়ে যান এবং পরে বিপাকে পড়েন। তাই, এই বিষয়ে সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বন করুন।
| অবশ্যই সঙ্গে রাখবেন | সঙ্গে রাখবেন না (নিষিদ্ধ) |
|---|---|
| অ্যাডমিট কার্ড (প্রিন্ট করা) | মোবাইল ফোন |
| বৈধ সচিত্র পরিচয়পত্র (পাসপোর্ট/NID/ড্রাইভিং লাইসেন্স) | স্মার্টওয়াচ/ডিজিটাল ঘড়ি |
| HB পেন্সিল (কমপক্ষে দুটি) | ক্যালকুলেটর |
| ভালো মানের রাবার | ডিকশনারি/বই/নোটস |
| পেন্সিল শার্পনার | যেকোনো ইলেকট্রনিক ডিভাইস |
| সাধারণ অ্যানালগ ঘড়ি | অতিরিক্ত কাগজ |
| স্বচ্ছ পানির বোতল | খাবারের প্যাকেট (প্রয়োজনে শুধু পানির বোতল) |
মানসিক প্রস্তুতি: দুশ্চিন্তা দূরে রেখে মনকে শান্ত রাখার উপায়।
JLPT পরীক্ষার সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হলো মানসিক চাপ সামলানো। যতই পড়াশোনা করুন না কেন, পরীক্ষার আগে টেনশন হওয়াটা খুব স্বাভাবিক। আমার নিজেরও প্রথমবার N3 পরীক্ষা দেওয়ার আগে বুক ধড়ফড় করছিল। কিন্তু পরে বুঝেছিলাম যে, এই দুশ্চিন্তা আমার পারফরম্যান্সকে খারাপ করে দিতে পারে। তাই, পরীক্ষার আগের দিন এবং পরীক্ষার দিন সকালে মনকে শান্ত রাখাটা খুবই জরুরি। গভীর শ্বাস-প্রশ্বাস, মেডিটেশন বা হালকা ইয়োগা আপনাকে মানসিকভাবে প্রস্তুত করতে সাহায্য করতে পারে। নিজের প্রতি বিশ্বাস রাখাটা খুব গুরুত্বপূর্ণ। আপনি যা শিখেছেন, তা যথেষ্ট ভালো, এই আত্মবিশ্বাস নিয়ে পরীক্ষা দিতে যাওয়া উচিত। অতিরিক্ত চাপ নিলে মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা কমে যায় এবং সহজ জিনিসও কঠিন মনে হতে পারে। বন্ধুদের সাথে শেষ মুহূর্তের পড়াশোনা বা আলোচনা থেকে বিরত থাকুন, কারণ এতে আপনার আত্মবিশ্বাস কমে যেতে পারে বা ভুল তথ্য পেয়ে আরও বিভ্রান্ত হতে পারেন। বরং শান্ত পরিবেশে নিজের মনকে গুছিয়ে নিন।
সঠিক খাদ্যাভ্যাস ও পর্যাপ্ত ঘুম
পরীক্ষার আগে মানসিক চাপ কমানোর জন্য সঠিক খাদ্যাভ্যাস এবং পর্যাপ্ত ঘুম অপরিহার্য। জাঙ্ক ফুড বা অতিরিক্ত ক্যাফেইনযুক্ত পানীয় এড়িয়ে চলুন, কারণ এগুলো আপনার অস্থিরতা বাড়াতে পারে। আমার পরামর্শ হলো, পরীক্ষার কয়েকদিন আগে থেকেই হালকা, পুষ্টিকর এবং সহজে হজমযোগ্য খাবার খান। এছাড়াও, পরীক্ষার আগের রাতে কমপক্ষে ৭-৮ ঘণ্টা ঘুমানো খুবই জরুরি। ঘুম কম হলে মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা কমে যায় এবং মনোযোগ ধরে রাখা কঠিন হয়ে পড়ে। আমি দেখেছি, যারা ভালোভাবে ঘুমিয়ে পরীক্ষা দিতে যায়, তারা অনেক বেশি ফোকাসড থাকে এবং ভুল করার প্রবণতাও কম হয়। ঘুমানোর আগে মোবাইল ফোন বা ল্যাপটপ ব্যবহার না করে হালকা কোনো বই পড়তে পারেন বা গান শুনতে পারেন, যা আপনাকে রিল্যাক্স হতে সাহায্য করবে।
নেতিবাচক চিন্তা পরিহার এবং ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি
নেতিবাচক চিন্তা পরীক্ষার আগে আপনার সবচেয়ে বড় শত্রু হতে পারে। “যদি ফেল করি?”, “যদি প্রশ্ন কঠিন হয়?” – এই ধরনের চিন্তা আপনার আত্মবিশ্বাস নষ্ট করে দেবে। আমার অভিজ্ঞতা বলে, এই সময়টায় ইতিবাচক থাকাটা খুব জরুরি। নিজেকে বলুন, “আমি আমার সর্বোচ্চ চেষ্টা করেছি, এবং আমি ভালো করব।” পরীক্ষার ফলাফল নিয়ে বেশি চিন্তা না করে বর্তমান মুহূর্তে মনোযোগ দিন। আপনি আপনার পরিশ্রমের ওপর বিশ্বাস রাখুন। বন্ধুদের সাথে পরীক্ষার বিষয় নিয়ে অতিরিক্ত আলোচনা না করে নিজের মতো করে প্রস্তুতি নিন। মনে রাখবেন, JLPT পরীক্ষা শুধু একটি পরীক্ষা নয়, বরং জাপানি ভাষার প্রতি আপনার ভালোবাসার একটি প্রতিফলন। তাই, ইতিবাচক মন নিয়ে পরীক্ষা দিতে যান এবং আত্মবিশ্বাসের সাথে প্রতিটি প্রশ্নের উত্তর দিন। দেখবেন, আপনার আত্মবিশ্বাস আপনার পারফরম্যান্সকে আরও বাড়িয়ে দিয়েছে।
প্রশ্নপত্র হাতে পেলে: সঠিক কৌশল আর মনোযোগের খেলা।
অবশেষে সেই মুহূর্ত! প্রশ্নপত্র হাতে পেলে প্রথমেই তাড়াহুড়ো করবেন না। আমার মনে আছে, প্রথম JLPT পরীক্ষায় প্রশ্নপত্র হাতে নিয়েই কেমন একটা অস্থিরতা কাজ করছিল। কিন্তু ধীরে ধীরে বুঝেছিলাম যে, প্রথম ৫-১০ মিনিট খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এই সময়টায় প্রশ্নপত্রটি ভালো করে পড়ে নেওয়া এবং কোন সেকশনে কত সময় দেবেন, তার একটা প্রাথমিক পরিকল্পনা করে নেওয়া দরকার। বিশেষ করে রিডিং সেকশন (Dokkai) এবং লিসেনিং সেকশন (Choukai)-এর জন্য সময় বরাদ্দ করা খুবই জরুরি। অনেকেই ভুল করেন যে, একটি সেকশনে অতিরিক্ত সময় ব্যয় করে ফেলেন এবং অন্য সেকশনে সময় কম পান। প্রতিটি সেকশনের নির্দেশনা মনোযোগ দিয়ে পড়ুন। উত্তর পত্রে দাগানোর ক্ষেত্রেও সতর্ক থাকতে হবে, কারণ একবার ভুল হলে তা মোছা কঠিন হতে পারে এবং অনেক সময় এতে নম্বরও কাটা যায়। তাই, ঠান্ডা মাথায়, ধীরেসুস্থে প্রতিটি প্রশ্নের উত্তর দিন। এটা শুধু জ্ঞানের পরীক্ষা নয়, সময় ব্যবস্থাপনা আর মনোযোগেরও পরীক্ষা।
সময় ব্যবস্থাপনা: প্রতিটি সেকশনের জন্য নির্দিষ্ট সময় বরাদ্দ
JLPT পরীক্ষার প্রতিটি সেকশনের জন্য একটি নির্দিষ্ট সময় বরাদ্দ থাকে। প্রশ্নপত্র হাতে পাওয়ার পর প্রথমেই পুরো প্রশ্নপত্রটি একবার চোখ বুলিয়ে নিন এবং কোন সেকশনে কত সময় ব্যয় করবেন, তার একটি অনুমান করে নিন। যেমন, Vocabulary (Moji-Goi) এবং Grammar (Bunpo)-এর জন্য তুলনামূলক কম সময় বরাদ্দ করুন, আর Reading (Dokkai)-এর জন্য একটু বেশি সময় রাখুন। আমার পরামর্শ হলো, প্রতিটি সেকশনে নির্দিষ্ট সময় পার হওয়ার পর পরের সেকশনে চলে যান, भलेই কিছু প্রশ্ন বাকি থেকে যায়। কারণ, একটি সেকশনে অতিরিক্ত সময় ব্যয় করলে অন্য সেকশনের জন্য পর্যাপ্ত সময় নাও পেতে পারেন। ঘড়ির দিকে খেয়াল রেখে সময় ব্যবস্থাপনা করা খুবই জরুরি। এতে আপনি পুরো পরীক্ষাটি ভালোভাবে শেষ করতে পারবেন।
উত্তরপত্রে দাগানোর কৌশল ও সতর্কতা
JLPT পরীক্ষায় উত্তরপত্র (answer sheet) পূরণ করাটা খুবই সতর্কতার সাথে করতে হয়। পেন্সিল দিয়ে কালো বা নীল কালি ব্যবহার করে বৃত্ত পূরণ করতে হবে। মনে রাখবেন, কোনো রকম কাটাকুটি বা ভুল দাগানো আপনার নম্বর কমিয়ে দিতে পারে। আমার পরামর্শ হলো, প্রথমে পেন্সিল দিয়ে হালকা করে উত্তর চিহ্নিত করুন এবং নিশ্চিত হওয়ার পর ভালো করে বৃত্ত পূরণ করুন। যদি কোনো প্রশ্নের উত্তর সম্পর্কে নিশ্চিত না থাকেন, তাহলে পরবর্তী প্রশ্নের দিকে এগিয়ে যান এবং পরে যদি সময় পান, তাহলে সেই প্রশ্নটিতে ফিরে আসুন। উত্তরপত্রে রোল নম্বর, রেজিস্ট্রেশন নম্বর বা অন্য কোনো ব্যক্তিগত তথ্য পূরণ করার সময় অত্যন্ত সতর্ক থাকুন, কারণ এতে কোনো ভুল হলে আপনার ফলাফল প্রকাশে সমস্যা হতে পারে। পরীক্ষা শুরুর আগে ইনভিজিলেটরের নির্দেশনাগুলো মনোযোগ দিয়ে শুনুন এবং সে অনুযায়ী কাজ করুন।
পরীক্ষা শেষে: ভবিষ্যতের জন্য কিছু গুরুত্বপূর্ণ ভাবনা।
পরীক্ষা শেষ হওয়ার পর অনেকেই দ্রুত হল থেকে বের হওয়ার জন্য অস্থির হয়ে ওঠেন। কিন্তু আমার মনে হয়, পরীক্ষা শেষ হওয়ার পরও কিছু বিষয় মাথায় রাখা দরকার, যা আপনার পরবর্তী পদক্ষেপের জন্য সহায়ক হবে। প্রথমেই, নিশ্চিত করুন যে আপনার অ্যাডমিট কার্ড, আইডি কার্ড এবং অন্যান্য ব্যক্তিগত জিনিসপত্র ঠিকঠাক ব্যাগে রাখা হয়েছে। কোনো কিছু ফেলে যাবেন না। পরীক্ষা শেষে বন্ধুদের সাথে প্রশ্নপত্র নিয়ে আলোচনা করাটা অনেকের অভ্যাস, কিন্তু আমার ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা বলে, এতে শুধু টেনশন বাড়ে। আপনার যা করার ছিল, তা আপনি করে ফেলেছেন। এখন ফলাফল আসার জন্য অপেক্ষা করা ছাড়া আর কিছু করার নেই। তাই, আলোচনা করে মন খারাপ করা বা অতিরিক্ত আনন্দিত হওয়া, দুটোই এড়িয়ে চলা ভালো। বরং বাড়ি ফিরে এসে একটু বিশ্রাম নিন এবং নিজের অন্য কাজগুলো নিয়ে ভাবুন। মনে রাখবেন, JLPT একটি ধাপ মাত্র, আপনার জাপানি ভাষা শেখার যাত্রা এখনও অনেক বাকি।
ফলাফলের জন্য অপেক্ষা ও পরবর্তী পরিকল্পনা

পরীক্ষা শেষ হওয়ার পর সবচেয়ে কঠিন কাজ হলো ফলাফলের জন্য অপেক্ষা করা। এই সময়টায় বেশি দুশ্চিন্তা না করে মনকে শান্ত রাখুন। ফলাফল প্রকাশের একটি নির্দিষ্ট তারিখ থাকে, তাই অযথা বারবার ওয়েবসাইটে চেক করার দরকার নেই। এই সময়ের মধ্যে আপনি আপনার জাপানি ভাষা শেখার পরবর্তী ধাপ নিয়ে পরিকল্পনা করতে পারেন। যদি JLPT N3 পরীক্ষা দিয়ে থাকেন, তাহলে N2-এর জন্য প্রস্তুতি শুরু করার কথা ভাবতে পারেন, অথবা জাপানি সংস্কৃতি বা অন্যান্য দক্ষতা বিকাশে মনোযোগ দিতে পারেন। আমার পরামর্শ হলো, ফলাফলের উপর আপনার পুরো ভবিষ্যতের পরিকল্পনা নির্ভর না করে, আপনার শেখার প্রক্রিয়াকে চালিয়ে যান। JLPT শুধু একটি সার্টিফিকেট, কিন্তু জাপানি ভাষায় আপনার দক্ষতা এবং জ্ঞানই আসল সম্পদ।
ভবিষ্যতের লক্ষ্য নির্ধারণ ও ভাষা শিক্ষায় ধারাবাহিকতা
JLPT পরীক্ষা পাশ করা মানেই কিন্তু আপনার জাপানি ভাষা শেখার যাত্রা শেষ হয়ে যাওয়া নয়। বরং এটি আপনার জন্য একটি নতুন দ্বার উন্মোচন করে। যারা জাপানে উচ্চশিক্ষা বা চাকরির স্বপ্ন দেখেন, তাদের জন্য JLPT একটি গুরুত্বপূর্ণ যোগ্যতা। তাই, এই পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়ার পর আপনার ভবিষ্যতের লক্ষ্যগুলো নিয়ে নতুন করে ভাবুন। কোন ক্ষেত্রে আপনি আপনার জাপানি ভাষাকে কাজে লাগাতে চান?
পড়াশোনা, চাকরি, নাকি ব্যক্তিগত আগ্রহ? আমার মনে হয়, JLPT পরীক্ষার পর আপনার ভাষা শেখার ধারাবাহিকতা বজায় রাখাটা খুব জরুরি। নিয়মিত জাপানিজ মুভি দেখা, বই পড়া, জাপানিজ বন্ধুদের সাথে কথা বলা – এগুলো আপনার ভাষাকে আরও উন্নত করতে সাহায্য করবে। মনে রাখবেন, ভাষা একটি জীবন্ত জিনিস, যা প্রতিনিয়ত চর্চার মাধ্যমে বিকশিত হয়।
গ্ৰন্থ শেষ
বন্ধুরা, JLPT পরীক্ষা শুধু আপনার জাপানি ভাষার জ্ঞান যাচাই করে না, এটি আপনার ধৈর্য এবং আত্মবিশ্বাসেরও পরীক্ষা। এতক্ষণ ধরে আমরা পরীক্ষার আগের প্রস্তুতি থেকে শুরু করে পরীক্ষার হলে কী করা উচিত এবং পরীক্ষা পরবর্তী করণীয় সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করলাম। আমার বিশ্বাস, এই টিপসগুলো আপনাদের পরীক্ষার প্রস্তুতিতে দারুণভাবে সাহায্য করবে। মনে রাখবেন, শেষ মুহূর্তের উদ্বেগ এড়িয়ে আত্মবিশ্বাসের সাথে পরীক্ষা দিতে যাওয়াটা খুবই জরুরি। আপনি আপনার সেরাটা দিন, বাকিটা উপরওয়ালার হাতে ছেড়ে দিন। আপনার কঠোর পরিশ্রম কখনোই বৃথা যাবে না। আপনাদের সবার জন্য রইলো অনেক অনেক শুভকামনা!
কিছু দরকারী টিপস যা আপনি জানতে চাইতে পারেন
এখানে কিছু অতিরিক্ত টিপস দেওয়া হলো যা আপনার পরীক্ষার অভিজ্ঞতাকে আরও মসৃণ করতে সাহায্য করবে:
১. পরীক্ষার আগের রাতটা ভালো ঘুমিয়ে কাটান। পর্যাপ্ত ঘুম আপনার মস্তিষ্ককে সতেজ রাখবে এবং পরীক্ষার হলে মনোযোগ ধরে রাখতে সাহায্য করবে। অতিরিক্ত রাত জাগা বা শেষ মুহূর্তে নতুন কিছু শেখার চেষ্টা করলে হিতে বিপরীত হতে পারে। নিজের উপর বিশ্বাস রেখে তাড়াতাড়ি বিছানায় যান।
২. পরীক্ষার কেন্দ্রে যাওয়ার জন্য অন্তত দেড় থেকে দুই ঘণ্টা হাতে রাখুন। অপ্রত্যাশিত যানজট বা অন্য কোনো সমস্যার কারণে দেরি হওয়া খুবই স্বাভাবিক। আগে পৌঁছালে আপনি পরিবেশের সাথে মানিয়ে নিতে পারবেন এবং মানসিক চাপও কম থাকবে। সময়মতো পৌঁছানো মানেই অর্ধেক চাপ মুক্তি।
৩. সকালের নাস্তায় হালকা এবং পুষ্টিকর কিছু খান। ডিম, কলা, টোস্ট অথবা ওটস – এই ধরনের খাবার আপনাকে সারাদিন শক্তি যোগাবে। অতিরিক্ত ভারী বা ফাস্ট ফুড পরিহার করুন, কারণ এতে পরীক্ষার সময় ঘুম আসতে পারে বা অস্বস্তি লাগতে পারে। পর্যাপ্ত পানিও পান করুন।
৪. পরীক্ষা কেন্দ্রে পৌঁছানোর পর মোবাইল ফোনসহ সমস্ত ইলেকট্রনিক গ্যাজেট ব্যাগে ঢুকিয়ে দিন বা বাড়িতে রেখে যান। স্মার্টওয়াচ বা অন্য কোনো ডিজিটাল ডিভাইস পরীক্ষার হলে সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ এবং এর জন্য আপনার পরীক্ষা বাতিল হতে পারে। কোনো ঝুঁকি নেবেন না।
৫. পরীক্ষার হলে ঢোকার আগে শেষবারের মতো টয়লেট সেরে নিন। একবার পরীক্ষা শুরু হয়ে গেলে মাঝপথে বের হওয়া কঠিন হতে পারে এবং এতে আপনার মূল্যবান সময় নষ্ট হবে। এছাড়াও, একটি গভীর শ্বাস নিয়ে নিজেকে শান্ত করুন এবং আত্মবিশ্বাসের সাথে পরীক্ষা শুরু করুন।
গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলির সারসংক্ষেপ
JLPT পরীক্ষার জন্য সফলতার মূলমন্ত্র কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ের উপর নির্ভরশীল যা আপনার পুরো অভিজ্ঞতাকে ইতিবাচক করে তুলতে পারে। প্রথমত, পরীক্ষার আগে সঠিক এবং সুপরিকল্পিত প্রস্তুতি গ্রহণ করা অপরিহার্য। আপনার অ্যাডমিট কার্ড, পরিচয়পত্র, পেন্সিল, রাবার, শার্পনার এবং একটি সাধারণ ঘড়ি সবকিছু ঠিকঠাক গুছিয়ে রাখুন যাতে শেষ মুহূর্তে কোনো রকম তাড়াহুড়ো না হয়। দ্বিতীয়ত, পরীক্ষার দিনে সময়মতো কেন্দ্রে পৌঁছানোটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ, এর জন্য আগে থেকেই রুটের পরিকল্পনা করে রাখুন এবং পর্যাপ্ত সময় হাতে নিয়ে বের হন। আমি দেখেছি, যারা শেষ মুহূর্তে পৌঁছানোর চেষ্টা করে, তাদের মানসিক চাপ অনেক বেড়ে যায়, যা পারফরম্যান্সে খারাপ প্রভাব ফেলে। তৃতীয়ত, পরীক্ষার হলে আপনার মানসিক স্থিরতা এবং আত্মবিশ্বাস ধরে রাখাটা সাফল্যের চাবিকাঠি। প্রশ্নপত্র হাতে পাওয়ার পর তাড়াহুড়ো না করে প্রতিটি নির্দেশনা মনোযোগ দিয়ে পড়ুন এবং প্রতিটি সেকশনের জন্য সময় বরাদ্দ করে নিন। মোবাইল ফোন বা কোনো ইলেকট্রনিক ডিভাইস সঙ্গে রাখা থেকে কঠোরভাবে বিরত থাকুন, কারণ নিয়ম ভঙ্গের কারণে আপনার পরীক্ষা বাতিল হতে পারে। সর্বশেষ, পরীক্ষা শেষে ফলাফলের জন্য অপেক্ষা করার সময় নতুন করে দুশ্চিন্তা না করে বরং পরবর্তী লক্ষ্য নির্ধারণ করুন এবং আপনার জাপানি ভাষা শেখার ধারাবাহিকতা বজায় রাখুন। মনে রাখবেন, JLPT শুধু একটি পরীক্ষা নয়, এটি জাপানি ভাষার প্রতি আপনার ভালোবাসার একটি প্রতিফলন এবং আপনার ভবিষ্যতের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ ধাপ। এই সবগুলি বিষয় সঠিকভাবে অনুসরণ করতে পারলে আপনি অবশ্যই আপনার সেরাটা দিতে পারবেন এবং ভালো ফলাফল অর্জন করতে সক্ষম হবেন।
প্রায়শই জিজ্ঞাসিত প্রশ্ন (FAQ) 📖
প্র: পরীক্ষার দিন JLPT কেন্দ্রে যাওয়ার আগে সবচেয়ে জরুরি কোন জিনিসগুলো আমার সাথে নেওয়া নিশ্চিত করতে হবে?
উ: আরে বাবা, এটা তো পরীক্ষার দিনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন! আমার নিজের অভিজ্ঞতা থেকে বলতে পারি, প্রথমবার JLPT দিতে গিয়ে আমি একদম শেষ মুহূর্তে সব কিছু গুছিয়েছিলাম আর অনেক টেনশনে ছিলাম। কিন্তু একটু আগে থেকে গুছিয়ে নিলে এই চাপটা অনেকটাই কমে যায়। সবার আগে যেটা নিশ্চিত করতে হবে, সেটা হলো আপনার অ্যাডমিট কার্ড বা প্রবেশপত্র। এটা ছাড়া কিন্তু একদমই পরীক্ষা কেন্দ্রে ঢুকতে দেবে না। অ্যাডমিট কার্ডের প্রিন্ট করা কপিটা অবশ্যই সাথে রাখুন। এছাড়াও, আপনার পাসপোর্ট বা ন্যাশনাল আইডি কার্ডের মতো একটা বৈধ পরিচয়পত্র সঙ্গে রাখুন, যেখানে আপনার ছবি আছে। পরীক্ষার হলে রোল কল বা ভেরিফিকেশনের সময় এটা দেখাতে হতে পারে।আর হ্যাঁ, পরীক্ষার জন্য অবশ্যই HB পেন্সিল নিয়ে যাবেন, কারণ JLPT-তে উত্তর দাগানোর জন্য HB পেন্সিলই ব্যবহার করতে হয়। ২-৩টা HB পেন্সিল সাথে রাখুন, যাতে একটা ভেঙে গেলেও অন্যটা দিয়ে কাজ চালাতে পারেন। আর একটা ভালো রাবার বা ইরেজার তো চাই-ই চাই। আমার তো মনে আছে, একবার আমার রাবারটা কোথায় যেন ফেলে এসেছিলাম, পরীক্ষার হলে গিয়ে ভীষণ টেনশনে পড়েছিলাম!
আরেকটা জরুরি জিনিস হলো একটা সাধারণ ঘড়ি। পরীক্ষার হলে অনেক সময় ডিজিটাল বা স্মার্টওয়াচ এলাউ করে না, তাই একটা অ্যানালগ ঘড়ি সাথে রাখুন যাতে সময় দেখে পরীক্ষা শেষ করতে পারেন। এই জিনিসগুলো যেন কোনো মতেই বাদ না যায়, একদম ব্যাগ গোছানোর সময় সবার প্রথমে এইগুলোই ঢুকিয়ে নেবেন!
প্র: JLPT পরীক্ষা কেন্দ্রে সাধারণত কী কী নিয়ম মেনে চলতে হয় এবং কোন জিনিসগুলো সাথে নেওয়া উচিত নয়?
উ: JLPT পরীক্ষা কেন্দ্রের নিয়মকানুনগুলো জানা থাকলে অনর্থক ঝামেলায় পড়তে হয় না, আর আপনি নিজের মনোযোগটা শুধু পরীক্ষার দিকেই দিতে পারবেন। আমার মনে আছে, একবার একজন পরীক্ষার্থী মোবাইল ফোন নিয়ে পরীক্ষার হলে ঢুকেছিল আর বিপদে পড়েছিল। তাই এই বিষয়ে সতর্ক থাকা খুব জরুরি। সাধারণত, পরীক্ষার হলে মোবাইল ফোন, স্মার্টওয়াচ, ইলেকট্রনিক গ্যাজেট বা যেকোনো ধরনের ইলেকট্রনিক ডিভাইস সম্পূর্ণভাবে নিষিদ্ধ। এগুলো সাথে থাকলে পরীক্ষার হল পরিদর্শক আপনাকে পরীক্ষা দিতে নাও দিতে পারেন বা আপনার পরীক্ষা বাতিলও হতে পারে। তাই এগুলো বাড়িতে রেখে যাওয়াই বুদ্ধিমানের কাজ।এছাড়াও, পরীক্ষার হলে কোনো ধরনের বই, নোটস বা অন্য কোনো কাগজপত্রের টুকরো নিয়ে প্রবেশ করা যাবে না। আপনার সাথে কেবল অ্যাডমিট কার্ড, পরিচয়পত্র, পেন্সিল, রাবার আর সাধারণ ঘড়ি থাকবে। জলের বোতল বা খাবার-দাবার প্রসঙ্গে, অনেক কেন্দ্রে জলের বোতল নিয়ে ঢোকার অনুমতি থাকে, তবে বোতলটা স্বচ্ছ হতে হবে আর কোনো লেবেল থাকা চলবে না। আর খাবারদাবার সাধারণত পরীক্ষা হলের ভেতরে নিয়ে যেতে দেওয়া হয় না, বিরতি থাকলে বাইরে খেয়ে আসতে পারেন। সব কেন্দ্রেই কিন্তু পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতার দিকে নজর রাখা হয়, তাই আপনার কারণে যেন অন্য কোনো পরীক্ষার্থীর অসুবিধা না হয়, সেদিকেও খেয়াল রাখবেন। পরীক্ষা শুরুর অন্তত ৩০ মিনিট আগে কেন্দ্রে পৌঁছানোর চেষ্টা করুন যাতে শেষ মুহূর্তের ছোটাছুটি থেকে বাঁচা যায় এবং সব নিয়মকানুন শান্তভাবে শুনে নিতে পারেন।
প্র: পরীক্ষার দিন অপ্রত্যাশিত পরিস্থিতি বা চাপ সামলানোর জন্য আপনি কি কোনো বিশেষ টিপস দিতে পারবেন?
উ: ওহ, অপ্রত্যাশিত পরিস্থিতি! এটা তো JLPT কেন, যেকোনো বড় পরীক্ষার দিনই ঘটতে পারে। আমার নিজের একবার প্রথম পরীক্ষা দেওয়ার সময় বাসের জন্য অপেক্ষা করতে গিয়ে দেরি হয়ে গিয়েছিল, ভাবতেই বুক ধড়ফড় করে ওঠে!
তাই এই ধরণের চাপ সামলানোর জন্য কিছু কৌশল অবলম্বন করা খুব জরুরি। সবার আগে যেটা করবেন, সেটা হলো পরীক্ষা কেন্দ্রের ঠিকানাটা ভালো করে জেনে নেবেন, আর গুগল ম্যাপে দেখে নেবেন যেতে কতক্ষণ লাগতে পারে। পারলে আগের দিন একবার কেন্দ্রটা দেখে আসতে পারেন। এতে পরীক্ষার দিন রাস্তা খুঁজে পেতে বাসে নামতে কোনো ভুল হবে না।পরীক্ষার দিন পর্যাপ্ত ঘুমিয়ে সকাল সকাল উঠুন। তাড়াহুড়ো করে বের হলে মানসিক চাপ বেড়ে যায়। ব্রেকফাস্টটা হালকা কিছু করুন, যা আপনার পেট খারাপ করবে না। পরীক্ষা কেন্দ্রে পৌঁছানোর পর অ্যাডমিট কার্ড, আইডি, পেন্সিল, রাবার – সবকিছু ঠিকঠাক আছে কিনা আরেকবার চেক করে নিন। আর যদি মনে হয় কোনো কিছু ভুলে গেছেন, তাহলে ঘাবড়ে না গিয়ে কর্তৃপক্ষের সাথে কথা বলুন। অনেক সময় তারা হয়তো সাহায্য করতে পারেন। পরীক্ষার হলে ঢুকে অযথা অন্য পরীক্ষার্থীদের সাথে কথা বলে সময় নষ্ট করবেন না। নিজের জায়গায় শান্ত হয়ে বসুন, চোখ বন্ধ করে লম্বা শ্বাস নিন কয়েকবার, এতে মন শান্ত হবে। মনে রাখবেন, এই পরীক্ষার জন্য আপনি অনেক খেটেছেন, তাই নিজের ওপর বিশ্বাস রাখুন। কোনো প্রশ্ন কঠিন মনে হলে সেটাতে বেশি সময় নষ্ট না করে পরের প্রশ্নে চলে যান, পরে সময় থাকলে আবার ফিরে আসতে পারবেন। সব মিলিয়ে একটু ঠাণ্ডা মাথায় সবটা সামলাতে পারলে আপনার সেরাটা দিতে পারবেন!






