জাপানি ভাষা শেখাটা অনেকের কাছেই একটা স্বপ্নের মতো, তাই না? বিশেষ করে JLPT-এর মতো একটা আন্তর্জাতিক পরীক্ষা পাশ করাটা তো একটা বড় চ্যালেঞ্জ! আমি যখন প্রথম জাপানি ভাষা শেখা শুরু করেছিলাম, তখন কত দ্বিধা আর ভয় ছিল!
মনে হত, এত কঠিন ভাষা কিভাবে শিখবো, পরীক্ষায় পাশ করা তো দূরের কথা। কিন্তু আমার অভিজ্ঞতা বলে, সঠিক পরিকল্পনা আর কিছু কার্যকর কৌশল জানলে এই পথটা অনেকটাই সহজ হয়ে যায়। অনেকেই ভাবেন, শুধু ক্লাসে গিয়ে বা বই পড়ে সব হয়ে যাবে, কিন্তু আসল রহস্য লুকিয়ে আছে কিছু স্মার্ট স্টাডি টিপসের মধ্যে, যা বেশিরভাগ সময় আমরা জানিই না। এই পরীক্ষায় ভালো ফল করার জন্য শুধু পড়াশোনা করলেই হয় না, জানতে হয় কিভাবে পড়লে কম সময়ে বেশি ফল পাওয়া যায়, কোন বিষয়গুলোতে বিশেষ নজর দিতে হয়, আর কিভাবে পরীক্ষার হল-এর চাপ সামলে সেরাটা দেওয়া যায়।আমি নিজে দেখেছি, শুধু ব্যাকরণ আর শব্দভাণ্ডার মুখস্থ করলেই হয় না, বরং শোনা এবং পড়ার অনুশীলনের জন্য কিছু বিশেষ টিপস আছে যা আপনার প্রস্তুতিকে এক অন্য স্তরে নিয়ে যাবে। আর হ্যাঁ, JLPT শুধু জাপানে কাজ বা পড়াশোনার সুযোগই নয়, বরং এটা নিজেকে প্রমাণের একটা দারুণ প্ল্যাটফর্ম। JLPT N5 থেকে N1 পর্যন্ত প্রতিটি স্তরই আপনার দক্ষতাকে নতুনভাবে সংজ্ঞায়িত করে। কিন্তু কিভাবে এই কঠিন পথটা মসৃণ করা যায়?
কিভাবে মাত্র কয়েক মাসের প্রস্তুতিতেই N5 বা N4 এর মতো স্তরগুলো পার করা যায়? আমার এই ব্লগ পোস্টে, আমি আপনাদের সাথে শেয়ার করব এমন কিছু অব্যর্থ কৌশল আর দারুণ টিপস, যা আপনাকে JLPT পরীক্ষায় নিশ্চিত সাফল্য এনে দেবে। আমার নিজের শেখার অভিজ্ঞতা থেকে শুরু করে, জাপানি ভাষা বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ, আর সাম্প্রতিক সময়ের সবচেয়ে কার্যকর স্টাডি মেথডগুলো—সবই আমি এখানে আপনাদের জন্য গুছিয়ে এনেছি। এই টিপসগুলো শুধুমাত্র N5 এর জন্য নয়, বরং যেকোনো JLPT লেভেলের জন্যই দারুণ কাজে আসবে। আমি গ্যারান্টি দিচ্ছি, এই কৌশলগুলো আপনার জাপানি ভাষা শেখার যাত্রাকে শুধু আনন্দময়ই করবে না, বরং আপনাকে পৌঁছে দেবে আপনার কাঙ্খিত লক্ষ্যে। তাহলে চলুন, জাপানি ভাষার এই কঠিন পথটাকে আরও মসৃণ করে তোলার গোপন রহস্যগুলো আর দেরি না করে এক্ষুনি জেনে নেওয়া যাক!
JLPT পরীক্ষার গোলকধাঁধা ভেদ করার প্রথম ধাপ

জাপানি ভাষা শেখাটা অনেকের কাছেই একটা বিশাল পাহাড়ের মতো লাগে, বিশেষ করে যখন JLPT-এর মতো একটা পরীক্ষার কথা মাথায় আসে। আমার নিজের অভিজ্ঞতা থেকে বলছি, প্রথম দিকে আমিও ঠিক এমনটাই অনুভব করতাম। মনে হতো, এই এত কঠিন ভাষা কিভাবে রপ্ত করবো? কিন্তু সত্যি বলতে, এই পথটা মোটেও ততটা কঠিন নয় যদি আপনি সঠিক পরিকল্পনা আর কৌশল অবলম্বন করেন। জাপানি ভাষা শেখার ক্ষেত্রে সবচেয়ে জরুরি হলো একটা স্পষ্ট লক্ষ্য নির্ধারণ করা। আপনি কোন স্তরের পরীক্ষা দিচ্ছেন, N5, N4 নাকি N1? আপনার লক্ষ্য যত পরিষ্কার হবে, আপনার প্রস্তুতি তত গোছানো হবে। যেমন ধরুন, N5 পরীক্ষা মানেই কিন্তু আপনাকে বেসিক লেভেলের কঞ্জি, শব্দভাণ্ডার আর ব্যাকরণ খুব ভালো করে জানতে হবে। আপনি যদি শুরুতেই N3 বা N2 এর বই নিয়ে বসেন, তাহলে খুব দ্রুতই হতাশ হয়ে যেতে পারেন। তাই নিজের বর্তমান স্তরটা সঠিকভাবে বুঝে নিয়ে সেই অনুযায়ী প্রস্তুতি শুরু করাটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আমি সবসময়ই বলি, ছোট ছোট পদক্ষেপে এগোলে বড় লক্ষ্যে পৌঁছানো সহজ হয়। প্রথমেই N5 এর জন্য নিজেকে তৈরি করুন, এরপর N4, এভাবে ধাপে ধাপে এগোলে দেখবেন আপনার আত্মবিশ্বাসও অনেক বেড়ে যাবে। আমি নিজেও এই পদ্ধতি অনুসরণ করে খুব ভালো ফল পেয়েছি, যা আমাকে পরবর্তী স্তরগুলোর জন্য আরও অনুপ্রাণিত করেছে।
সঠিক লেভেল নির্বাচন ও লক্ষ্য স্থির করা
প্রথমেই আপনাকে জানতে হবে আপনার বর্তমান জাপানি ভাষার দক্ষতা কোন পর্যায়ে আছে। একদম নতুন হলে N5 দিয়ে শুরু করাটাই বুদ্ধিমানের কাজ। আমার অনেক বন্ধুকে দেখেছি, যারা শুরুতেই উচ্চতর স্তরের জন্য চেষ্টা করে হতাশ হয়েছে। তাই শুরুতেই আপনার লক্ষ্যটা স্থির করুন—আপনি কোন JLPT পরীক্ষাটি দিতে চান? তারপর সেই অনুযায়ী একটি দীর্ঘমেয়াদী এবং একটি স্বল্পমেয়াদী পরিকল্পনা তৈরি করুন। যেমন, আপনি যদি আগামী ৬ মাসের মধ্যে N4 পাশ করতে চান, তাহলে প্রতি মাসে কোন অধ্যায়গুলো শেষ করবেন, কতগুলো কঞ্জি মুখস্থ করবেন, বা কতটুকু ব্যাকরণ শিখবেন—তার একটা বিস্তারিত ছক তৈরি করে নিন। এই ছক আপনাকে পথ থেকে বিচ্যুত হতে দেবে না এবং আপনার প্রতিদিনের পড়াশোনাকে একটি নির্দিষ্ট কাঠামো দেবে। আমি নিজের জন্য সবসময় একটি “স্টাডি জার্নাল” রাখতাম, যেখানে প্রতিদিনের অগ্রগতি লিখে রাখতাম। এটা আমাকে প্রেরণা যোগাতো এবং আমার দুর্বল দিকগুলো চিহ্নিত করতে সাহায্য করতো।
সুসংগঠিত পাঠ্যক্রম ও বিশ্বস্ত রিসোর্স ব্যবহার
জাপানি ভাষা শেখার জন্য বাজারে প্রচুর বই আর অনলাইন রিসোর্স আছে। কিন্তু সব বই বা রিসোর্সই JLPT-এর জন্য উপযুক্ত নয়। আমার পরামর্শ হলো, Minna no Nihongo, Genki, বা Marugoto-এর মতো জনপ্রিয় এবং পরীক্ষিত বইগুলো বেছে নিন। আমি নিজে Minna no Nihongo দিয়ে শুরু করেছিলাম এবং এর গঠনশৈলী আমাকে খুব সাহায্য করেছে। এই বইগুলোতে ব্যাকরণ, শব্দভাণ্ডার, কঞ্জি এবং শ্রুতি ও পঠন—সবকিছুই খুব সুন্দরভাবে সাজানো থাকে। এছাড়াও, বিভিন্ন অনলাইন প্ল্যাটফর্ম যেমন JapanesePod101, Memrise, Duolingo, বা Anki ফ্ল্যাশকার্ডগুলো আপনার প্রস্তুতিকে আরও মজবুত করতে পারে। তবে অতিরিক্ত রিসোর্স ব্যবহার করে নিজেকে বিভ্রান্ত করবেন না। ২-৩টি প্রধান বই বা রিসোর্স বেছে নিয়ে সেগুলোর উপরই মনোযোগ দিন। আমার অভিজ্ঞতা বলে, একটি বা দুটি ভালো রিসোর্স বারবার অনুশীলন করা ১০০টি গড়পড়তা রিসোর্স একবার দেখার চেয়ে অনেক বেশি কার্যকর।
ব্যাকরণ আর শব্দভাণ্ডার: মজবুত ভিত গড়ার সহজ উপায়
জাপানি ভাষা শেখার ক্ষেত্রে ব্যাকরণ আর শব্দভাণ্ডার হলো দুটো স্তম্ভের মতো। এই দুটো জিনিস যদি দুর্বল থাকে, তাহলে পুরো কাঠামোই নড়বড়ে হয়ে যাবে। আমি যখন প্রথম জাপানি ভাষা শেখা শুরু করেছিলাম, তখন মনে হতো এত কঞ্জি আর শব্দ কিভাবে মনে রাখবো! কিন্তু আসলে এর জন্য কিছু কার্যকর পদ্ধতি আছে। ব্যাকরণ বোঝার জন্য শুধু নিয়ম মুখস্থ করলেই হয় না, সেগুলোকে বাস্তব জীবনে বা বাক্য তৈরির মাধ্যমে অনুশীলন করাটা জরুরি। যেমন, একটা নতুন ব্যাকরণ শিখলে সেটা দিয়ে অন্তত ৫-১০টা বাক্য নিজে নিজে তৈরি করার চেষ্টা করুন। ছোট ছোট ডায়লগ তৈরি করে বন্ধু বা আপনার স্টাডি পার্টনারের সাথে অনুশীলন করতে পারেন। এতে ব্যাকরণের ব্যবহারিক দিকটা আপনার কাছে আরও পরিষ্কার হয়ে যাবে। আমি দেখেছি, যারা শুধু বইয়ের উদাহরণ পড়ে, তারা পরীক্ষার হলে নতুন পরিস্থিতিতে ব্যাকরণ প্রয়োগ করতে হিমশিম খায়। তাই ব্যবহারিক অনুশীলনই হলো আসল চাবিকাঠি।
কঞ্জি এবং শব্দভাণ্ডার মুখস্থ করার নতুন কৌশল
কঞ্জি শেখাটা JLPT-এর একটা বড় অংশ। অনেকেই কঞ্জি দেখে ভয় পেয়ে যান। আমার নিজেরও এই অভিজ্ঞতা হয়েছে। কিন্তু কঞ্জি শেখার কিছু দারুণ কৌশল আছে। যেমন, কঞ্জিকে শুধু ছবি হিসেবে না দেখে এর মূল অংশগুলো (র্যাডিক্যাল) বোঝার চেষ্টা করুন। অনেক কঞ্জি তাদের র্যাডিক্যালগুলোর অর্থ থেকে তৈরি হয়, যা আপনাকে কঞ্জির অর্থ বুঝতে সাহায্য করবে। WaniKani-এর মতো অ্যাপগুলো কঞ্জি শেখার জন্য খুবই কার্যকর। এছাড়াও, Anki ফ্ল্যাশকার্ড ব্যবহার করে আপনি প্রতিদিন নির্দিষ্ট সংখ্যক নতুন কঞ্জি এবং শব্দ মুখস্থ করতে পারেন এবং পুরনো কঞ্জিগুলো রিভিশন দিতে পারেন। আমি নিজে কঞ্জি শেখার সময় ছোট ছোট গল্প বানাতাম। যেমন, কোনো কঞ্জির অর্থ যদি “বন” হয়, আর তার র্যাডিকেলে যদি “গাছ” থাকে, তাহলে আমি ভাবতাম, “অনেক গাছ মিলে বন হয়”। এই ধরনের ছোট গল্প কঞ্জি মনে রাখতে দারুণ সাহায্য করে। শব্দভাণ্ডারের ক্ষেত্রেও একই কথা। শুধু তালিকা থেকে মুখস্থ না করে, নতুন শব্দগুলোকে বাক্যে ব্যবহার করার চেষ্টা করুন। জাপানি গান শোনা, সিনেমা দেখা বা জাপানিজ ইউটিউব চ্যানেল দেখার সময় নতুন শব্দগুলো নোট করে রাখুন।
ব্যাকরণকে আয়ত্তে আনার কার্যকরী উপায়
ব্যাকরণ শেখার জন্য সবচেয়ে ভালো উপায় হলো, একটি নির্দিষ্ট JLPT স্তরের জন্য নির্ধারিত ব্যাকরণের তালিকা ধরে ধরে শেখা। যেমন N5-এর জন্য ~masu, ~desu, ~wa, ~ga, ~no ইত্যাদি। প্রতিটি ব্যাকরণিক কাঠামো ভালোভাবে বুঝে নিন এবং প্রতিটি প্যাটার্নের জন্য একাধিক উদাহরণ দেখুন। এরপর নিজে নিজে বাক্য তৈরি করার চেষ্টা করুন। আমার পরামর্শ হলো, একটি ব্যাকরণ নোটবুক তৈরি করুন। যখনই কোনো নতুন ব্যাকরণ শিখবেন, তার সংজ্ঞা, ব্যবহারবিধি এবং নিজের তৈরি করা উদাহরণ বাক্যগুলো লিখে রাখুন। সপ্তাহে অন্তত একবার পুরনো ব্যাকরণগুলো রিভিশন দিন। জাপানি ভাষার ব্যাকরণ অনেকটা ধাঁধার মতো। একটি অংশ আরেকটির সাথে যুক্ত থাকে। তাই বেসিক ব্যাকরণগুলো মজবুত না হলে পরের ধাপগুলোতে সমস্যা হতে পারে। আমি দেখেছি, অনেকে দ্রুত এগিয়ে যেতে চায় এবং বেসিক ব্যাকরণগুলো ভালোভাবে না শিখে পরের স্তরে চলে যায়, যার ফলস্বরূপ তাদের ভিত্তি দুর্বল থেকে যায়। তাই তাড়াহুড়ো না করে ধীরে ধীরে কিন্তু মজবুতভাবে ব্যাকরণ শিখুন।
শোনা আর পড়া: জাপানি ভাষার স্রোতে গা ভাসানো
জাপানি ভাষা শেখার ক্ষেত্রে শোনা আর পড়ার অনুশীলনটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কারণ, শুধু ব্যাকরণ আর শব্দভাণ্ডার জানলেই হবে না, সেগুলোকে বাস্তবে কীভাবে ব্যবহার করা হয়, সেটা বোঝাটা জরুরি। আমি যখন প্রথম JLPT N5-এর জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছিলাম, তখন শোনার অংশে খুব সমস্যা হতো। মনে হতো জাপানিরা এত দ্রুত কথা বলে যে কিছুই বুঝতে পারছি না! কিন্তু নিয়মিত অনুশীলনের মাধ্যমে আমি এই সমস্যাটা কাটিয়ে উঠেছি। জাপানিদের সাথে কথা বলতে না পারলেও, আপনি বিভিন্ন অডিও এবং ভিডিও রিসোর্স ব্যবহার করে আপনার শোনার দক্ষতা বাড়াতে পারেন। জাপানি সংবাদ, পডকাস্ট, ইউটিউব ভিডিও—এগুলো শোনার মাধ্যমে আপনার কান জাপানি ভাষার ধ্বনিগুলোর সাথে পরিচিত হবে।
শ্রুতি দক্ষতা বৃদ্ধির জন্য কার্যকরী টিপস
শ্রবণের জন্য সবচেয়ে ভালো উপায় হলো, জাপানিজ মিডিয়াতে নিজেকে ডুবিয়ে দেওয়া। আমি নিজে জাপানি অ্যানিমে, ড্রামা এবং ইউটিউব চ্যানেল দেখে আমার শোনার দক্ষতা অনেক বাড়িয়েছি। প্রথম দিকে সাবটাইটেল (বাংলা বা ইংরেজি) ব্যবহার করতে পারেন, তবে ধীরে ধীরে জাপানি সাবটাইটেলে এবং তারপর সাবটাইটেল ছাড়া শোনার চেষ্টা করুন। জাপানি পডকাস্টগুলোও খুব কাজে আসে, কারণ এগুলো আপনি যাতায়াতের সময় বা অন্য কোনো কাজ করার সময় শুনতে পারবেন। আমার প্রিয় একটি কৌশল ছিল, একটি ছোট অডিও ক্লিপ বারবার শোনা। প্রথমে একবার শুনে মূল বিষয়বস্তু বোঝার চেষ্টা করতাম, তারপর দ্বিতীয়বার শুনে কিছু নির্দিষ্ট শব্দ বা বাক্যাংশ বোঝার চেষ্টা করতাম, এবং সবশেষে স্ক্রিপ্ট দেখে মিলিয়ে নিতাম। এভাবে করলে আপনার কান জাপানিজ শব্দের উচ্চারণ এবং প্রবাহের সাথে পরিচিত হবে এবং আপনি বাক্য গঠনগুলো দ্রুত ধরতে পারবেন। JLPT পরীক্ষায় শোনার অংশে ভালো করার জন্য এই ধরনের অনুশীলন অপরিহার্য।
পঠন দক্ষতা উন্নয়নের অভিনব পদ্ধতি
পড়ার ক্ষেত্রেও নিয়মিত অনুশীলন জরুরি। JLPT-এর রিডিং সেকশনটা বেশ চ্যালেঞ্জিং হতে পারে, কারণ সময় কম থাকে আর টেক্সটগুলো বেশ লম্বা হয়। আমার অভিজ্ঞতা বলে, প্রথমে ছোট ছোট জাপানিজ গল্প বা শিশুদের বই দিয়ে শুরু করা ভালো। Hiragana এবং Katakana ভালোভাবে জানার পর এই ধরনের বই আপনাকে পড়ার অভ্যাস তৈরি করতে সাহায্য করবে। এরপর ধীরে ধীরে JLPT-এর জন্য তৈরি করা পঠন সামগ্রীগুলো পড়ুন। JLPT N5 এবং N4 স্তরের জন্য সহজ সংবাদ নিবন্ধ বা ব্লগ পোস্টগুলো পড়া যেতে পারে। জাপানিজ ওয়েবসাইটে সহজ সংবাদ পড়ার জন্য NHK News Web Easy-এর মতো সাইটগুলো দারুণ কার্যকরী। এখানে কঞ্জিগুলোর উপর ক্লিক করলে ফুরিগানা দেখা যায় এবং নতুন শব্দগুলোর ব্যাখ্যাও দেওয়া থাকে। আমার পরামর্শ হলো, পড়ার সময় অপরিচিত শব্দ বা কঞ্জিগুলো নোট করে নিন এবং পরে সেগুলোর অর্থ খুঁজে বের করে মুখস্থ করুন। এতে আপনার শব্দভাণ্ডারও সমৃদ্ধ হবে। নিয়মিত পড়ার অভ্যাস আপনাকে দ্রুত জাপানিজ টেক্সট বুঝতে এবং অর্থ বের করতে সাহায্য করবে।
মক টেস্টের জাদু: নিজেকে যাচাই করার আসল মন্ত্র
যেকোনো পরীক্ষার জন্য মক টেস্ট বা মডেল টেস্ট দেওয়াটা খুবই জরুরি, আর JLPT-এর ক্ষেত্রে তো এর গুরুত্ব আরও বেশি। আমার মনে আছে, প্রথম যখন আমি মক টেস্ট দিয়েছিলাম, তখন আমার স্কোর দেখে ভীষণ মন খারাপ হয়েছিল। মনে হয়েছিল, আমি তো কিছুই জানি না! কিন্তু সেই হতাশাকে আমি শক্তিতে পরিণত করেছিলাম। মক টেস্ট আপনাকে পরীক্ষার আসল পরিবেশের সাথে পরিচিত করিয়ে দেয় এবং আপনার সময় ব্যবস্থাপনার দক্ষতা বাড়ায়। JLPT-এর প্রতিটি বিভাগে নির্দিষ্ট সময় বরাদ্দ থাকে। আপনি যদি আগে থেকে সময় ধরে অনুশীলন না করেন, তাহলে আসল পরীক্ষার হলে সময়ের অভাবে অনেক প্রশ্ন ছেড়ে আসতে পারেন। তাই নিয়মিত মক টেস্ট দিয়ে নিজের দুর্বল দিকগুলো চিহ্নিত করা এবং সেগুলোকে উন্নত করা অপরিহার্য।
পরীক্ষার পরিবেশের সাথে পরিচিতি এবং সময় ব্যবস্থাপনা
মক টেস্ট দেওয়ার সময় চেষ্টা করুন আসল পরীক্ষার পরিবেশ তৈরি করতে। কোনো রকম শব্দ বা বিঘ্ন ছাড়া একটি শান্ত রুমে বসে পরীক্ষা দিন। মোবাইল ফোন বন্ধ রাখুন এবং পরীক্ষার সময় কোনো ব্রেক নেবেন না। ঘড়ি ধরে প্রতিটি সেকশনের জন্য নির্দিষ্ট সময় বরাদ্দ করুন। যেমন, JLPT N5-এর জন্য ভাষা জ্ঞান (শব্দভাণ্ডার ও ব্যাকরণ) এবং পঠন অংশের জন্য ৪০ মিনিট এবং শ্রবণ অংশের জন্য ২৫ মিনিট বরাদ্দ থাকে। এই সময়সীমা কঠোরভাবে মেনে পরীক্ষা দেওয়ার চেষ্টা করুন। আমি নিজে মক টেস্ট দেওয়ার পর প্রতিটি ভুল প্রশ্ন বিশ্লেষণ করতাম। কেন ভুল হলো? ব্যাকরণ বুঝতে সমস্যা হয়েছে নাকি শব্দার্থ জানতাম না? এই বিশ্লেষণের মাধ্যমে আমি আমার দুর্বল জায়গাগুলো খুঁজে বের করতাম এবং সেগুলোর উপর আরও বেশি মনোযোগ দিতাম। এই পদ্ধতিটি আমাকে আমার অগ্রগতি ট্র্যাক করতে এবং পরীক্ষার দিনে আত্মবিশ্বাসের সাথে অংশ নিতে সাহায্য করেছে।
দুর্বলতা চিহ্নিতকরণ এবং সমাধানের উপায়
মক টেস্টের পর শুধু স্কোর দেখে হতাশ না হয়ে, প্রতিটি ভুলের গভীরে যান। আপনার কোন অংশে বেশি ভুল হচ্ছে? কঞ্জিতে, শব্দভাণ্ডারে, ব্যাকরণে নাকি শ্রবণে? নাকি পড়ার সময় আপনি দ্রুত অর্থ ধরতে পারছেন না? একবার যখন আপনি আপনার দুর্বল ক্ষেত্রগুলো চিহ্নিত করতে পারবেন, তখন সেগুলোর উপর বিশেষভাবে কাজ করুন। উদাহরণস্বরূপ, যদি আপনার কঞ্জিতে সমস্যা হয়, তাহলে প্রতিদিন নতুন কঞ্জি মুখস্থ করার এবং পুরনো কঞ্জিগুলো রিভিশন দেওয়ার জন্য আরও বেশি সময় দিন। যদি শ্রবণে সমস্যা হয়, তাহলে জাপানি পডকাস্ট বা অ্যানিমে দেখার সময় বাড়ান। বাজারে JLPT-এর জন্য অনেক অনুশীলন বই পাওয়া যায়, যেগুলোতে বিগত বছরের প্রশ্নপত্র এবং মক টেস্ট থাকে। সেগুলো ব্যবহার করে অনুশীলন করুন। আমার পরামর্শ হলো, প্রতিটি মক টেস্টের পর অন্তত এক সপ্তাহ সেই ভুলের জায়গাগুলো নিয়ে কাজ করুন, তারপর আবার আরেকটি মক টেস্ট দিন। এই চক্রাকার অনুশীলন আপনাকে পরীক্ষার জন্য সম্পূর্ণরূপে প্রস্তুত করে তুলবে।
সময় ব্যবস্থাপনা আর মনস্তাত্ত্বিক প্রস্তুতি: সাফল্যের চাবিকাঠি

JLPT পরীক্ষার প্রস্তুতি শুধু পড়াশোনার মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকে না, এর সাথে জড়িয়ে আছে সঠিক সময় ব্যবস্থাপনা এবং মানসিক প্রস্তুতি। আমি যখন প্রথমবার JLPT দিয়েছিলাম, তখন পরীক্ষার আগের দিন রাতের ঘুম আর টেনশনে আমার অবস্থা খুব খারাপ হয়ে গিয়েছিল। কিন্তু পরে বুঝতে পারলাম, সুপরিকল্পিত সময় ব্যবস্থাপনা এবং মানসিক দৃঢ়তা যেকোনো পরীক্ষায় ভালো করার জন্য কতটা জরুরি। আপনি যদি প্রতিদিন একটি নির্দিষ্ট রুটিন মেনে পড়াশোনা করেন, তাহলে আপনার মস্তিষ্কের উপর চাপ অনেক কমে যাবে। এছাড়াও, পরীক্ষার আগের দিন বা পরীক্ষার হলে শান্ত থাকাটা খুব জরুরি, কারণ অতিরিক্ত টেনশন আপনার জানা জিনিসগুলোকেও ভুলিয়ে দিতে পারে।
কার্যকর স্টাডি প্ল্যানিং এবং রুটিন তৈরি
একটি কার্যকর স্টাডি প্ল্যান তৈরি করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আপনার প্রতিদিনের সময়সূচী, কাজের চাপ এবং ব্যক্তিগত জীবন—সবকিছু বিবেচনা করে একটি রুটিন তৈরি করুন। প্রতিদিন অন্তত ২-৩ ঘণ্টা জাপানি ভাষার জন্য বরাদ্দ রাখুন। মনে রাখবেন, নিয়মিত পড়াশোনা করাটা একদিনে অনেকক্ষণ পড়াশোনা করার চেয়ে বেশি কার্যকর। আমি নিজে প্রতিদিন সকালে এক ঘণ্টা কঞ্জি ও শব্দভাণ্ডার মুখস্থ করতাম, দুপুরে ব্যাকরণ অনুশীলন করতাম এবং সন্ধ্যায় জাপানি অ্যানিমে বা পডকাস্ট শুনতাম। এই রুটিন আমাকে ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে সাহায্য করেছে। এছাড়াও, আপনার স্টাডি প্ল্যানে সাপ্তাহিক এবং মাসিক রিভিশনের জন্য সময় রাখুন। পুরনো জিনিসগুলো নিয়মিত ঝালিয়ে না নিলে ভুলে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। একটি বাস্তবসম্মত রুটিন তৈরি করুন যা আপনি মেনে চলতে পারবেন। অতিরিক্ত উচ্চাকাঙ্ক্ষী রুটিন তৈরি করে মাঝপথে ছেড়ে দিলে তা আপনার মনোবল ভেঙে দেবে।
পরীক্ষার দিনের মানসিক প্রস্তুতি ও চাপ নিয়ন্ত্রণ
পরীক্ষার আগের দিন রাতে পর্যাপ্ত ঘুম খুবই জরুরি। সারা রাত জেগে পড়াশোনা করলে পরীক্ষার হলে আপনার মস্তিষ্ক সঠিকভাবে কাজ করবে না। পরীক্ষার দিন সকালে হালকা কিছু খেয়ে পরীক্ষা কেন্দ্রে যান। আমি দেখেছি, অনেকে খালি পেটে গিয়ে পরীক্ষার হলে অসুস্থ হয়ে পড়ে। পরীক্ষার হলে যাওয়ার আগে সমস্ত প্রয়োজনীয় কাগজপত্র, কলম, প্রবেশপত্র ইত্যাদি গুছিয়ে নিন। পরীক্ষার হলে প্রবেশ করার পর লম্বা শ্বাস নিন এবং নিজেকে শান্ত রাখার চেষ্টা করুন। যদি কোনো প্রশ্ন কঠিন মনে হয়, তাহলে সেটিতে অতিরিক্ত সময় নষ্ট না করে পরের প্রশ্নে চলে যান। পরে সময় পেলে আবার ফিরে আসতে পারেন। মনে রাখবেন, আপনার প্রস্তুতি যথেষ্ট ভালো, তাই আত্মবিশ্বাসী থাকুন। নিজের উপর বিশ্বাস রাখুন এবং শান্ত মনে পরীক্ষা দিন।
JLPT-এর পরেও জাপানি ভাষার সাথে সম্পর্ক
JLPT পাশ করা মানেই কিন্তু জাপানি ভাষা শেখার যাত্রা শেষ হয়ে যাওয়া নয়, বরং এটা নতুন এক শুরু। আমার ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা থেকে বলছি, JLPT N2 পাশ করার পর আমি ভেবেছিলাম কাজ শেষ, এখন জাপানি ভাষার সাথে আর তেমন সম্পর্ক রাখার দরকার নেই। কিন্তু তারপরই বুঝলাম, কোনো ভাষা শেখার ক্ষেত্রে ধারাবাহিকতা বজায় রাখাটা কতটা জরুরি। JLPT শুধু আপনার একটি নির্দিষ্ট স্তরের দক্ষতা প্রমাণ করে, কিন্তু ভাষার আসল দক্ষতা আসে নিয়মিত ব্যবহার আর অনুশীলনের মাধ্যমে। জাপানে কাজ বা পড়াশোনার সুযোগ পেতে হলে আপনাকে শুধু পরীক্ষা পাশ করলেই চলবে না, বরং বাস্তব জীবনে জাপানি ভাষা সাবলীলভাবে ব্যবহার করতে জানতে হবে।
ভাষা শেখার ধারাবাহিকতা বজায় রাখা
JLPT পাশ করার পর অনেকেই ভাষা শেখার গতি কমিয়ে দেন, যা মোটেও উচিত নয়। আমি সবসময়ই আমার বন্ধুদের পরামর্শ দিই, JLPT-এর পরের স্তরগুলোর জন্য প্রস্তুতি নেওয়া শুরু করতে। যদি আপনার N5 পাশ হয়ে যায়, তাহলে N4-এর জন্য প্রস্তুতি নিন। এই ধারাবাহিকতা আপনাকে ভাষার সাথে যুক্ত রাখবে এবং আপনার জ্ঞানকে আরও গভীর করবে। জাপানি সিনেমা, বই, সংবাদপত্র নিয়মিত পড়ার এবং শোনার অভ্যাস বজায় রাখুন। জাপানি ভাষা শেখার অ্যাপগুলো ব্যবহার করে কঞ্জি এবং শব্দভাণ্ডার রিভিশন দিতে থাকুন। আপনি চাইলে জাপানি ভাষা শেখার অনলাইন কমিউনিটিগুলোতে যোগ দিতে পারেন, যেখানে অন্য শিক্ষার্থীদের সাথে অনুশীলন করতে পারবেন। আমার মনে আছে, N2 পাশ করার পর আমি একটি জাপানিজ ল্যাঙ্গুয়েজ এক্সচেঞ্জ গ্রুপে যোগ দিয়েছিলাম, যেখানে আমি জাপানিজ বন্ধুদের সাথে নিয়মিত কথা বলার সুযোগ পেতাম। এটা আমার কথা বলার দক্ষতা অনেক বাড়িয়ে দিয়েছে।
জাপানি সংস্কৃতির সাথে নিজেকে যুক্ত করা
জাপানি ভাষা শুধু কয়েকটি শব্দ বা ব্যাকরণের সমষ্টি নয়, এটি জাপানি সংস্কৃতির একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ। ভাষা শেখার পাশাপাশি জাপানি সংস্কৃতি সম্পর্কে জানুন। জাপানিজ খাবার, উৎসব, ঐতিহ্য, ইতিহাস—এগুলো সম্পর্কে জানলে ভাষা শেখার প্রক্রিয়াটি আরও আনন্দময় হয়ে উঠবে। আমি দেখেছি, যারা জাপানি সংস্কৃতির প্রতি আগ্রহী হয়, তাদের ভাষা শেখার আগ্রহও অনেক বেশি থাকে। জাপানি অ্যানিমে, মাঙ্গা, জ-পপ (J-Pop) বা জ-ড্রামা (J-Drama) দেখা আপনাকে জাপানি সংস্কৃতির সাথে পরিচিত হতে সাহায্য করবে। জাপানি সংস্কৃতি বিষয়ক ব্লগ বা ইউটিউব চ্যানেল ফলো করতে পারেন। এছাড়াও, আপনি যদি সুযোগ পান, তাহলে জাপানিজ বন্ধুদের সাথে মিশে তাদের সংস্কৃতি সম্পর্কে সরাসরি জানতে পারেন। জাপানি ভাষা শেখাটা শুধুমাত্র একটি পরীক্ষা পাশ করা নয়, বরং একটি নতুন সংস্কৃতিকে আলিঙ্গন করার একটি মাধ্যম।
JLPT-এর বিভিন্ন স্তর: আপনার জন্য কোনটি?
জাপানি ভাষা শেখার যাত্রায় JLPT-এর বিভিন্ন স্তরগুলো ধাপের মতো কাজ করে। N5 থেকে N1 পর্যন্ত, প্রতিটি স্তরই আপনার জাপানি ভাষার দক্ষতার একটি নির্দিষ্ট মানদণ্ড। অনেকেই দ্বিধায় ভোগেন যে কোন স্তর দিয়ে শুরু করবেন বা কোন স্তরটি তাদের জন্য উপযুক্ত। আমার ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা বলে, নিজের বর্তমান জ্ঞান আর শেখার গতি বিবেচনা করে স্তর নির্বাচন করাটা খুবই জরুরি। যেমন, একজন নতুন শিক্ষার্থী যদি সরাসরি N3-এর জন্য প্রস্তুতি নেওয়া শুরু করে, তবে তাকে অনেক বেশি পরিশ্রম করতে হবে এবং হতাশ হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। তাই ধাপে ধাপে এগোলে পথটা অনেক মসৃণ হয়। এই অংশে আমরা JLPT-এর বিভিন্ন স্তর সম্পর্কে আলোচনা করব, যাতে আপনি আপনার জন্য সঠিক স্তরটি বেছে নিতে পারেন।
JLPT N5 থেকে N1 পর্যন্ত স্তরের বিবরণ
JLPT পাঁচটি স্তরে বিভক্ত: N5, N4, N3, N2, এবং N1। N5 হলো সবচেয়ে সহজ স্তর এবং N1 হলো সবচেয়ে কঠিন। প্রতিটি স্তরের জন্য নির্দিষ্ট সংখ্যক কঞ্জি, শব্দভাণ্ডার এবং ব্যাকরণ জানতে হয়। নিচের টেবিলে প্রতিটি স্তরের একটি সংক্ষিপ্ত বিবরণ দেওয়া হলো:
| JLPT স্তর | প্রয়োজনীয় কঞ্জি (প্রায়) | প্রয়োজনীয় শব্দভাণ্ডার (প্রায়) | ভাষার দক্ষতা |
|---|---|---|---|
| N5 | ১০০ | ৮০০ | খুবই মৌলিক জাপানিজ বুঝতে পারা (যেমন সাধারণ কথোপকথন) |
| N4 | ৩০০ | ১৫০০ | দৈনন্দিন জীবনের সাধারণ পরিস্থিতি বুঝতে পারা |
| N3 | ৬৫০ | ৩০০০ | দৈনন্দিন জীবনের পরিস্থিতি এবং কিছু কঠিন বিষয় বুঝতে পারা |
| N2 | ১০০০ | ৬০০০ | দৈনন্দিন পরিস্থিতি এবং বিভিন্ন সংবাদ নিবন্ধ বুঝতে পারা |
| N1 | ২০০০+ | ১০০০০+ | বিভিন্ন বিষয় নিয়ে জটিল কথোপকথন এবং উচ্চ স্তরের টেক্সট বুঝতে পারা |
আমি নিজে N5 দিয়ে শুরু করেছিলাম এবং প্রতিটি স্তর সফলভাবে পাশ করে N2 পর্যন্ত পৌঁছেছি। আমার মনে আছে, N5 পাশ করার পর যে আত্মবিশ্বাস পেয়েছিলাম, তা আমাকে N4-এর জন্য প্রস্তুতি নিতে আরও উৎসাহ দিয়েছিল। এই টেবিলটি আপনাকে আপনার লক্ষ্য নির্ধারণে সাহায্য করবে।
সঠিক স্তর বেছে নেওয়ার গুরুত্ব
সঠিক স্তর বেছে নেওয়াটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ, কারণ এটি আপনার প্রস্তুতি এবং সফলতার উপর সরাসরি প্রভাব ফেলে। আপনি যদি জাপানি ভাষা শেখার ক্ষেত্রে একেবারে নতুন হন, তাহলে N5 দিয়ে শুরু করাটাই সবচেয়ে ভালো। এতে আপনার ভিত্তি মজবুত হবে এবং আপনি ধীরে ধীরে কঠিন স্তরগুলোর জন্য প্রস্তুত হতে পারবেন। যদি আপনার ইতিমধ্যে কিছু জাপানি ভাষার জ্ঞান থাকে, তাহলে আপনি একটি অনলাইন প্লেসমেন্ট টেস্ট দিয়ে আপনার বর্তমান স্তরটি জানতে পারেন এবং সেই অনুযায়ী N4 বা N3-এর জন্য প্রস্তুতি শুরু করতে পারেন। আমার পরামর্শ হলো, কোনো স্তরের জন্য প্রস্তুতি নেওয়ার আগে সেই স্তরের সিলেবাস এবং পরীক্ষার ধরন ভালোভাবে দেখে নিন। আপনার লক্ষ্য যদি জাপানে কাজ বা পড়াশোনা হয়, তাহলে N2 বা N1 পাশ করাটা অপরিহার্য। তাই আপনার দীর্ঘমেয়াদী লক্ষ্য মাথায় রেখে সঠিক স্তরটি বেছে নিন এবং সেই অনুযায়ী আপনার প্রস্তুতি শুরু করুন।
글을 শেষ করছি
জাপানি ভাষা শেখার এই যাত্রাটা নিঃসন্দেহে একটি চ্যালেঞ্জিং কিন্তু ফলপ্রসূ অভিজ্ঞতা। JLPT পরীক্ষা শুধু আপনার ভাষার জ্ঞানই যাচাই করে না, বরং আপনার ধৈর্য, অধ্যবসায় এবং শেখার আগ্রহকেও প্রতিফলিত করে। আমার নিজের অভিজ্ঞতা থেকে বলছি, প্রতিটি স্তর অতিক্রম করার আনন্দই আলাদা। মনে রাখবেন, JLPT পাশ করাটা একটি মাইলফলক, কিন্তু ভাষার সাথে আপনার সম্পর্কটা আরও দীর্ঘস্থায়ী হওয়া উচিত। নিয়মিত অনুশীলন, নতুন কিছু শেখার আগ্রহ এবং জাপানি সংস্কৃতির প্রতি ভালোবাসা আপনাকে এই পথে আরও এগিয়ে নিয়ে যাবে। তাই আত্মবিশ্বাস হারাবেন না, ছোট ছোট পদক্ষেপে এগোতে থাকুন, আর জাপানি ভাষার সৌন্দর্যে নিজেকে ডুবিয়ে দিন। এই পোস্টটি যদি আপনার JLPT প্রস্তুতির যাত্রায় সামান্য হলেও সাহায্য করতে পারে, তবে আমার পরিশ্রম সার্থক। আপনাদের সবার জন্য অনেক শুভকামনা রইলো!
আরও কিছু গুরুত্বপূর্ণ টিপস
১. নিয়মিত জাপানি মিডিয়া যেমন—অ্যানিমে, ড্রামা, পডকাস্ট, এবং জাপানি গান শুনুন। এটি আপনার কানকে জাপানি শব্দের সাথে পরিচিত করবে এবং শোনার দক্ষতা বাড়াবে।
২. জাপানিজ ল্যাঙ্গুয়েজ এক্সচেঞ্জ পার্টনার খুঁজে বের করুন। তাদের সাথে কথা বলার মাধ্যমে আপনার কথা বলার জড়তা কাটবে এবং বাস্তব জীবনের কথোপকথনের জন্য প্রস্তুতি নিতে পারবেন।
৩. Anki বা Memrise-এর মতো ফ্ল্যাশকার্ড অ্যাপ্লিকেশন ব্যবহার করুন। নতুন কঞ্জি এবং শব্দভাণ্ডার মুখস্থ করার জন্য এটি দারুণ কার্যকর, বিশেষ করে নিয়মিত রিভিশনের জন্য।
৪. JLPT-এর বিভিন্ন স্তরের জন্য নির্দিষ্ট মক টেস্ট বইগুলো নিয়মিত অনুশীলন করুন। এতে আপনি পরীক্ষার প্যাটার্নের সাথে পরিচিত হবেন এবং সময় ব্যবস্থাপনার দক্ষতা বাড়াতে পারবেন।
৫. শুধুমাত্র পরীক্ষার জন্য মুখস্থ না করে, জাপানি ভাষাকে উপভোগ করার চেষ্টা করুন। জাপানিজ ক্যালিগ্রাফি বা চা অনুষ্ঠানের মতো সাংস্কৃতিক কার্যক্রমে অংশ নিতে পারেন, যা আপনার ভাষা শেখার আগ্রহকে আরও বাড়িয়ে তুলবে।
গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলো এক নজরে
জাপানি ভাষা শেখার ক্ষেত্রে সঠিক লক্ষ্য নির্ধারণ, কার্যকর পাঠ্যক্রম অনুসরণ এবং নিয়মিত অনুশীলন খুবই জরুরি। নিজের বর্তমান স্তর বুঝে N5 বা N4 দিয়ে শুরু করাটা বুদ্ধিমানের কাজ। ব্যাকরণ এবং শব্দভাণ্ডারের ভিত্তি মজবুত করা, কঞ্জি শেখার জন্য ছোট ছোট গল্প তৈরি করা, এবং ফ্ল্যাশকার্ড ব্যবহার করা খুবই কার্যকর। শোনা ও পড়ার দক্ষতা বাড়াতে জাপানি মিডিয়া এবং সহজ গল্পগুলো নিয়মিত ব্যবহার করুন। মক টেস্টের মাধ্যমে নিজের দুর্বলতা চিহ্নিত করুন এবং সময় ব্যবস্থাপনার অনুশীলন করুন। সবশেষে, শুধু JLPT পাশ করা নয়, ভাষার সাথে ধারাবাহিক সম্পর্ক বজায় রাখা এবং জাপানি সংস্কৃতির সাথে নিজেকে যুক্ত করাটাই আসল সাফল্য। মানসিক চাপ নিয়ন্ত্রণ করে আত্মবিশ্বাসের সাথে পরীক্ষা দিন এবং শেখার প্রক্রিয়াটি উপভোগ করুন। এই ধাপগুলো অনুসরণ করলে JLPT-এর মতো যেকোনো ভাষাগত পরীক্ষাই আপনার কাছে সহজ মনে হবে।
প্রায়শই জিজ্ঞাসিত প্রশ্ন (FAQ) 📖
প্র: যারা নতুন জাপানি ভাষা শেখা শুরু করছেন এবং JLPT N5 বা N4 এর জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছেন, তাদের জন্য আপনার প্রথম পরামর্শ কী হবে?
উ: আমার নিজের অভিজ্ঞতা থেকে বলতে পারি, জাপানি ভাষা শেখার প্রথম ধাপটা একটু ভয়ের মনে হতে পারে, কিন্তু সঠিক দিকনির্দেশনা থাকলে পথটা অনেক সহজ হয়ে যায়। যারা N5 বা N4 এর জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছেন, তাদের জন্য আমার প্রথম পরামর্শ হলো, একটা স্পষ্ট লক্ষ্য নির্ধারণ করা এবং সে অনুযায়ী একটি রুটিন তৈরি করা। প্রথমে কানজি এবং হিরাগানা-কাতাকানা (জাপানি বর্ণমালা) মুখস্থ করাটা জরুরি। অনেকেই ভাবেন, এগুলোতে সময় নষ্ট, কিন্তু বিশ্বাস করুন, এটাই আপনার ভিত্তি। প্রতিদিন অন্তত ১ ঘণ্টা হিরাগানা-কাতাকানা অনুশীলনে ব্যয় করুন। এরপর আসা যাক শব্দভাণ্ডার (Vocabulary) এবং ব্যাকরণে (Grammar)। N5 এর জন্য প্রায় ৮০০-১০০০ শব্দ এবং N4 এর জন্য প্রায় ১৫০০-২৫০০ শব্দ জানাটা জরুরি। এর জন্য Minna no Nihongo-এর মতো বইগুলো দারুণ কাজ করে। তবে শুধু বই পড়লেই হবে না, প্রতিটি নতুন শব্দ বা ব্যাকরণিক কাঠামোকে বাস্তব জীবনে ব্যবহারের চেষ্টা করুন। যেমন, আমি যখন নতুন শব্দ শিখতাম, তখন সেগুলোকে ছোট ছোট বাক্য তৈরি করে নিজের ডায়েরিতে লিখতাম বা আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে সেগুলো ব্যবহার করে কথা বলার চেষ্টা করতাম। এতে শব্দগুলো মস্তিষ্কে ভালোভাবে গেঁথে যায়। আর হ্যাঁ, JLPT শুধু মুখস্থ বিদ্যার পরীক্ষা নয়, এটি আপনার ভাষার ব্যবহারিক জ্ঞানও যাচাই করে। তাই প্রতিদিন কিছু জাপানি পডকাস্ট বা ইউটিউব চ্যানেল দেখা শুরু করুন, भलेই আপনি সব না বোঝেন। এতে আপনার শোনার দক্ষতা এবং ভাষার প্রতি আগ্রহ দুটোই বাড়বে। মনে রাখবেন, ধারাবাহিকতাটাই আসল চাবিকাঠি।
প্র: JLPT পরীক্ষার প্রস্তুতির জন্য কোন ধরনের অধ্যয়ন পদ্ধতি সবচেয়ে কার্যকর বলে আপনি মনে করেন, বিশেষ করে শোনার এবং পড়ার অনুশীলনের ক্ষেত্রে?
উ: আমার কাছে মনে হয়, শুধু বই পড়ে JLPT পাশ করাটা প্রায় অসম্ভব! বিশেষ করে শোনার (Listening) এবং পড়ার (Reading) দক্ষতার জন্য কিছু বিশেষ কৌশল অবলম্বন করতে হয়। আমি যখন প্রস্তুতি নিচ্ছিলাম, তখন দেখেছি যে প্যাসিভ লার্নিং (যেমন শুধু লেকচার শোনা) এর চেয়ে অ্যাক্টিভ লার্নিং (যেমন নিজে অনুশীলন করা) অনেক বেশি কার্যকর। শোনার অনুশীলনের জন্য আমি যা করতাম, তা হলো জাপানিজ ড্রামা বা অ্যানিমে দেখা (সাবটাইটেল সহ এবং পরে সাবটাইটেল ছাড়া)। প্রথমে হয়তো কিছুই বুঝবেন না, কিন্তু ধীরে ধীরে কানে জাপানিজ কথার তালটা বসে যাবে। এরপর News Web Easy-এর মতো ওয়েবসাইটগুলো ব্যবহার করতাম, যেখানে সহজ জাপানি ভাষায় খবর থাকে। সেগুলো শুনতাম এবং সাথে সাথে বোঝার চেষ্টা করতাম। শোনার সময় যদি বুঝতে সমস্যা হয়, একই অংশ বারবার শুনুন। পড়ার অনুশীলনের জন্য, প্রতিদিন ছোট ছোট জাপানিজ আর্টিকেল পড়াটা খুব জরুরি। যেমন, ছোট গল্পের বই বা বাচ্চাদের জাপানিজ বই। এখানেও আমি আমার নিজস্ব কৌশল ব্যবহার করতাম: প্রথমে দ্রুত পুরো লেখাটা পড়তাম, মূল বিষয়টা বোঝার জন্য। এরপর, প্রতিটি বাক্য ধরে ধরে পড়তাম এবং যে শব্দ বা ব্যাকরণ বুঝতে পারতাম না, সেগুলোকে নোট করতাম। পরবর্তীতে সেগুলোর অর্থ খুঁজে বের করে আবার লেখাটা পড়তাম। এতে আমার শব্দভাণ্ডার যেমন বেড়েছে, তেমনি দ্রুত জাপানিজ টেক্সট বোঝার ক্ষমতাও তৈরি হয়েছে। সব সময় মনে রাখবেন, অনুশীলনই আপনাকে নিখুঁত করে তুলবে।
প্র: JLPT পরীক্ষার আগে বা পরীক্ষার হলে চাপ সামলানোর জন্য আপনার বিশেষ কোনো টিপস আছে কি? এবং পরীক্ষা পরবর্তী সময়ের জন্য আপনার কী পরামর্শ?
উ: JLPT পরীক্ষার আগে আর পরীক্ষার হলে যে নার্ভাসনেস হয়, সেটা আমি খুব ভালো করেই বুঝি। আমার মনে আছে, N3 পরীক্ষার আগে আমার হাত-পা কেমন ঠাণ্ডা হয়ে গিয়েছিল!
কিন্তু এই চাপ সামলানোর কিছু উপায় আছে। পরীক্ষার কয়েক সপ্তাহ আগে থেকে মক টেস্ট (Mock Test) দেওয়া শুরু করুন। একদম পরীক্ষার পরিবেশ তৈরি করে, নির্দিষ্ট সময়ে পরীক্ষা দেওয়ার চেষ্টা করুন। এতে আপনি সময় ব্যবস্থাপনা শিখবেন এবং পরীক্ষার ফরম্যাটের সাথে পরিচিত হবেন। আমি অন্তত ৪-৫টা মক টেস্ট দিয়েছিলাম। পরীক্ষার আগের রাতে পর্যাপ্ত ঘুম জরুরি। তাড়াহুড়ো করে নতুন কিছু শেখার চেষ্টা না করে, বরং যা শিখেছেন তা একবার চোখ বুলিয়ে নিন। পরীক্ষার হলে প্রবেশ করার আগে গভীর শ্বাস নিন, নিজেকে শান্ত করুন। প্রশ্নপত্র হাতে পাওয়ার পর, তাড়াহুড়ো না করে পুরো প্রশ্নটা একবার দেখে নিন। যে প্রশ্নগুলো সহজ মনে হয়, সেগুলো আগে উত্তর দিন। কঠিন প্রশ্নগুলো নিয়ে বেশি সময় নষ্ট করবেন না, বরং পরবর্তীতে ফিরে আসুন। আর সবচেয়ে বড় কথা, কোনো প্রশ্ন ছেড়ে আসবেন না। যদি কোনো প্রশ্নের উত্তর না জানেন, নিজের সেরা অনুমানটি ব্যবহার করুন। কারণ ভুল উত্তরের জন্য কোনো নেগেটিভ মার্কিং নেই!
পরীক্ষা শেষে ফলাফলের জন্য অপেক্ষা করাটা খুব কঠিন। কিন্তু মনে রাখবেন, JLPT শুধু একটি পরীক্ষা নয়, এটি আপনার জাপানি ভাষা শেখার যাত্রার একটি অংশ। যদি আপনার স্কোর ভালো নাও হয়, হতাশ হবেন না। আপনার দুর্বলতাগুলো চিহ্নিত করুন এবং সেগুলোতে কাজ করার জন্য একটি নতুন পরিকল্পনা তৈরি করুন। প্রথমবারেই N1 পাশ করার উদাহরণ খুব কম। আমি নিজেও ধাপে ধাপে সফল হয়েছি। এই অভিজ্ঞতাটা আপনাকে ভবিষ্যতে আরও ভালো করার জন্য অনুপ্রেরণা যোগাবে।






